ফিক্সড প্রাইস বা নির্ধারিত মূল্য, এটি ঝামেলা বিহীন পণ্য বিক্রয়ের একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত পন্থা। এতে ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে একটি বিশ্বাসের জায়গা তৈরি হয়। ফলে দর কষাকষি ছাড়াই একজন ক্রেতা নিশ্চিন্তে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য কিনে বাড়ি ফেরেন।
সময়ের পরিক্রমায় আমাদের এলাকাতেও এখন নির্ধারিত মূল্যের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। আমরাও এসব দোকান মালিকদের উপর পুরোপুরি বিশ্বাস করেই তাদের নির্ধারণ করা মূল্যে পণ্য কিনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এসব দোকানীরা আমাদের বিশ্বাসের কতটুকু মূল্যায়ণ করেন?
ছবির পণ্যটি স্থানীয় একটি দোকান থেকে কেনার পর আরেক দোকানে অন্য পণ্য কিনতে গিয়ে এর মূল্যটা হঠাৎ চোখে পড়লো। ২০০ মিলিলিটারের একটি ছোট তেলের বোতলের দাম এক দোকানে ২২০ টাকা রাখা হচ্ছে, আরেকটাতে একই জিনিস ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই তেলের ৩০০ মিলিলিটারের বোতল এক দোকানে ২৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, অন্যটাতে এটাই ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ এই ছোট একটি পণ্যের মধ্যেই দোকানভেদে ২০-২৫ শতাংশ মূল্যের হেরফের। এবং ঘুরে দেখা গেলো প্রায় সব দোকানেই ভিন্ন দাম। একইভাবে অন্যান্য পণ্যেও এমন লোকঠকানো হেরফের দেখা যায়। যেটা খুবই দুঃখজনক!
ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৩৮ ধারায় পণ্য মূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণের কথা থাকলেও আমাদের দেশে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঠিক তদারকি না থাকায় সারাদেশেই আমাদের মতো ভোক্তারা প্রতিনিয়ত ঠকে যাচ্ছি। এমতাবস্থায়, বিশ্বস্বীকৃত পন্থা নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রয়ে দোকানদারদের অতিমুনাফার লোভ না করে বিশ্বাসের জায়গাটা অক্ষুণ্ণ রাখা জরুরি। কারণ দিনশেষে আমরা আমরাই একে অপরের উপর পূর্ণ আস্থা ও ভালোবাসা নিয়ে পথ চলতে চাই।
★পরিশেষে, পণ্যের উর্ধ্বমুখী মূল্যের বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হৃদ্যতায় সুন্দর হোক আমাদের সমষ্টিগত পথচলা।
লেখক: মো: আল-আমিন সরকার-
সভাপতি, মাধবদী থানা প্রেস ক্লাব-নরসিংদী।