তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য নরসিংদীর রায়পুরার অলিপুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যানকে মনোনয়ন না দিয়ে নতুন প্রার্থীর ওপর ভরসা রেখেছিল আওয়ামী লীগ। গত ২৪ অক্টোবর আওয়ামী লীগের দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মনোনয়ন বোর্ডের সভায় নতুন প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। পরে গত বৃহস্পতিবার তাঁর মনোনয়ন বদলে ওই ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যানকে পুনরায় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে দলটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অলিপুরা ইউপিতে তৃণমূলের বর্ধিত সভার মাধ্যমে চারজনের নাম প্রস্তাব করে কেন্দ্রে পাঠায় উপজেলা আওয়ামীলীগ। তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আল আমিন ভুইয়া মাসুদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল হক, চারবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আলী আহমেদ দুলু এবং উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক খন্দকার কবির হোসেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, রায়পুরার অলিপুরায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল হক বাবুলকে প্রথমে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে বিতর্ক তৈরি হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতিবাদের মুখে তাঁর মনোনয়ন বদল করে বর্তমান চেয়ারম্যান আল আমিন ভুইয়া মাসুদকে পুনরায় দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। বর্তমানে আল আমিন ভুইয়া মাসুদকে নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারণ একসময় তিনি ছাত্রদলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সুসময়ে দলে অনুপ্রবেশকারী এই সাবেক ছাত্রদল নেতাকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নৌকার মাঝি হিসেবে মেনে নিতে চাইছেন না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ ওই এলাকা ও এলাকার বাইরে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।
জানতে চাইলে প্রথমে মনোনয়ন পাওয়া ওবায়দুল হক বাবুল বলেন, গত নির্বাচনে আমি বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলাম না। নেতাকর্মীদের অনুরোধে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও আমার প্রতীকে কিছু ভোট পড়েছিল। এই বিষয়টিকে পুঁজি করেই আমার প্রতিপক্ষরা আমার মনোনয়নের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। তবে এখন যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি আওয়ামী লীগের একজন অনুপ্রবেশকারী হিসেবে পরিচিত। বিএনপি-ছাত্রদলের একনিষ্ঠ একজন কর্মীকে নৌকা তুলে দেওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কষ্ট পেয়েছেন।
পুনরায় মনোনয়ন পাওয়া বর্তমান চেয়ারম্যান আল আমিন ভুইয়া মাসুদ জানান, তৃনমূল থেকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ আমাকে একক প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিল। তবুও কেন একজন বিদ্রোহী প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন তা আমার জানা নেই। কেন্দ্রীয় কমিটির যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আমি পুনরায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছি। তবে ছাত্রদলের কমিটিতে নাম থাকার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।
দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের সত্যতা নিশ্চিত করে রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসাইন জানান, দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গত ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ায় ওবায়দুল হকের মনোনয়ন পরিবর্তন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় আপিল কমিটি যাচাই-বাছাই করে মনোনয়ন বাতিল এবং প্রদানের ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। এ ব্যাপারে আমাদের মন্তব্য করা ঠিক হবে না।