বাস, লঞ্চ ও ট্রাকমালিকদের ফাঁদে পা দিয়ে সরকার একতরফাভাবে যানবাহনের ভাড়া বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বর্ধিত গণপরিবহন ভাড়া প্রত্যাখ্যান করে ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডে বাস-লঞ্চের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাখ্যান এবং ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য ভাড়া নির্ধারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সহনীয় মাত্রায় ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও এই ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তা প্রতিফলন হয়নি। বাস ও লঞ্চমালিকদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে তাদের চাহিদা অনুযায়ী একচেটিয়া ভাড়া বাড়িয়েছে সরকার।’
বিআরটিএ ও বিআইডাব্লিউটিএ-এর অনেকেই মালিকদের পকেটে ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘যাত্রীর স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে গলাকাটা ভাড়া নির্ধারণের ফলে দেশের নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনসাধারণকে আবারও একদফা গভীর সংকটে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীতে যেভাবে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তা জুলুম বলা চলে। এখানে সিএনজির মূল্য বৃদ্ধির পর এক দফা ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। আবার তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর আবার ভাড়া বাড়ানো হলো। এতে যাত্রী সাধারণ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীর বর্ধিত বাস ভাড়া কার্যকরের আগে এখানে কী পরিমাণ বাস গ্যাসে চলে আর কী পরিমাণ বাস তেলে চলে তার সুরাহা হওয়া দরকার।’
সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ভাড়া নির্ধারণের ব্যয় বিশ্লেষণে পুরোনো বাসকে নতুন বাস হিসেবে দেখানো হয়েছে। চালক-হেলপারদের বেতন, বোনাস প্রদানের মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০ বছরের পুরোনো বাসকেও ব্যাংক লোনে দেখানো হয়েছে।
এক লাফে বাস ভাড়া ১.৪২ পয়সার ভাড়া ১.৮০ পয়সা করা হয়েছে। সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ করলে বড়জোর ১.৬০ পয়সা নির্ধারণ করা যেত বলে মনে করেন মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘এ রকম অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য ভাড়া বাতিল করে ১৫০০ থেকে ২০০০ যাত্রী ধারণ সক্ষমতার বড় লঞ্চের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা এবং ছোট ছোট নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা, লঞ্চ, ট্রলার যাদের যাত্রীধারণ সক্ষমতা ১৫০ থেকে ৫০০ জন- এসব নৌযানের ভাড়া ১ টাকা ২০ পয়সা করার দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে বাস্তবসম্মত ভাড়া নির্ধারণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ, সহসভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে।