অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় বিএনপি’র শীর্ষ নেতৃত্বের সাজা হওয়ায়, রাজনৈতিক দল হিসেবে ভবিষ্যতে দলটির অস্তিত্ব টিকে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘অস্ত্র চোরাচালান, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক দল টিকে থাকবে কীভাবে’, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর।
কুইন এলিজাবেথ সেন্টারে যুক্তরাজ্যে (ইউকে) বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া আজ এক নাগরিক সংবর্ধনায় ভাষণ দানকালে প্রধানমন্ত্রী এমন প্রশ্ন তোলেন।
লন্ডনে তার বাসস্থান থেকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অস্ত্র চোরাচালান ও দুর্নীতির পাশাপাশি হত্যা মামলায়ও সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেবল আমাদেরই (সরকার) নয়, খালেদা জিয়ার ছেলেদের করা এই দুর্নীতি যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই’র করা তদন্তে উঠে এসেছে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা (সরকার) বিদেশ থেকে তাদের পাচারকৃত কিছু অর্থ দেশে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি।
লন্ডনে তারেক রহমানের আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (খালেদা জিয়া এবং তার ছেলেদের) কোনো দেশপ্রেম নেই, কারণ তারা ক্ষমতাকে আনন্দের হাতিয়ার এবং লুটপাটের জায়গা হিসেবে বিবেচনা করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের পাশে থাকে এবং মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের মানুষ অন্ধকারের যুগে নিমজ্জিত হয়েছিল। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণ সরকারের কাছ থেকে সেবা পেতে শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন—১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর তিনি দেশের চাকাকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে শুরু করেছিলেন।
‘আজ বাংলাদেশ ভিক্ষা করে বাঁচে না। আজ বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ অর্থায়ন আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে আসে। আমরা সে সক্ষমতা অর্জন করেছি’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল সরকারকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির মামলায় জড়িয়েছে। আমি বিশ্বব্যাংকের কাছে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলাম। তারা সেটা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করে ভাগ্য গড়ার জন্য ক্ষমতায় আসে না। আমরা এখানে মানুষের ভাগ্য তৈরি করতে এসেছি, এটাই আমাদের লক্ষ্য। এবং আমরা সে লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের সারা দেশে নির্মিত ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা যাতে অন্যান্য দেশেও বিনিয়োগ করতে পারে, সেজন্য সরকার পথ প্রশস্ত করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ।