ইউপি নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি এসেছিলেন সালাউদ্দিন মিয়া (৩০)। কিন্তু ভোট দেয়া হলো না তার। নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। বাবাকে হারিয়ে শিশুকালেই এতিম হলো মিম (১০), সামির (৫) ও দেড় বছরের সানি। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে। নিহত সালাউদ্দিন মিয়া (৩০) ওই ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি গ্রামের হেকিম মিয়ার ছেলে। তিনি নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক ছিলেন।
নিহতের স্বজনেরা জানান, পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকতেন সালাউদ্দিন। ভোট দেয়ার জন্য বুধবার রাতে তিন শিশু ও স্ত্রীসহ বাড়িতে আসেন তিনি। ভোরে আওয়ামী লীগের (নৌকা প্রতীক) প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থক ও বিদ্রোহী প্রার্থী রাতুল হোসেন ওরফে জাকির হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় নৌকার পক্ষের লোকজন সালাউদ্দিনসহ আশপাশের বাড়িঘরে হামলা চালায়। তখন সালাউদ্দিন ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন।
ঘুমের মধ্যেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের বড় ভাই বাহারউদ্দিনের।
নিহত সালাউদ্দিনের শাশুড়ি হালিমা জানান, মেয়ের জামাতা এলাকায় সহিসংতার কারণে পরিবার নিয়ে ঢাকা থাকত। কোনো দিন কারও সঙ্গে ঝগড়া হতো না। তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর বিচার চাই।
এ দিকে এ ঘটনায় সালাউদ্দিন মিয়াসহ, বটতলীকান্দি গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (২৬) এবং সোবহানপুর গ্রামের আব্দুল হক মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর (২৬) নিহত হয়। নিহত সালাউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রাতুল হোসেন ওরফে জাকির হোসেনের সমর্থক এবং দুলাল মিয়া নৌকার প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থক ছিলেন।
নিহত দুলাল মিয়ার বৃদ্ধ বাবা সিরাজ মিয়া জানান, বউ-মা শ্বশুর বাড়িতে ছিলো। আর দুলাল আমাদের বাড়িতে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলো। মারামারি দেখতে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী রাতুল হোসেন ওরফে জাকির হোসেনের পক্ষের লোকজন তাকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে দাবি তার।
দ্বিতীয় ধাপে নরসিংদীর ১২টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।