ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীক ও পোস্টারে অগ্নিসংযোগের খরব পাওয়া গেছে। সোমবার দিবাগত রাতে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানান এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (২৩ মঙ্গলবার) এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন ভুঁইয়া।
জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে আসামী ২৮ নভেম্বর মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। তাঁরা হলেন, মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মাদ হোসেন ভূঁইয়া (নৌকা), জাকের পার্টির গোলাম রব্বানী (গোলাপ ফুল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সানা উল্লাহ ভূঁইয়া (আনারস)।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবণের সামনে আগুনে পুড়া বাঁশ ও কাপড়ের তৈরি একটি নৌকা প্রতীক ঝুলে আছে। নিচে পড়ে আছে কিছু পুড়া পোস্টার। এই পোস্টার গুলো একজন সংরক্ষিত নারী ও সাধারণ ইউপি সদস্য প্রার্থীর। তার পাশেই পাওয়া গেছে এক বোতল পেট্রল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাত আড়াইটা পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন দুজন গ্রাম পুলিশ। রাত আড়াইটার পর তারা ঘুমিয়ে পড়লে নৌকা প্রতীকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে সকালে বিষয়টি মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জানান গ্রাম পুলিশেন সদস্যরা।
মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিদ্রোহী প্রার্থী সানা উল্লাহ ভূঁইয়া। আমার মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগে ঊর্ধ্বতন থেকে তৃণমূল পর্যন্ত একটি মহল তাকে ইন্ধন দিচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা পুড়িয়েছে সে।
তিনি আরো বলেন, সানা উল্লাহর সন্ত্রাসী বাহিনী প্রতি গ্রামেই আমার কর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এমনকি ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে যাতে তারা ভোট কেন্দ্রে না যায়। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হব। এটা বুঝতে পেরেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে তারা। বিদ্রোহী প্রার্থী সানা উল্লাহর গ্রাম মতিউরনগরের (রামনগর) ৩, ৪ ও ৫ নং কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা রিটার্নিং অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়েছে জানান আওয়ামী লীগ প্রার্থী হোসেন ভূঁইয়া।
নৌকা প্রতীক পুড়ানো ও হুমকির অভিযোগটি পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন বিদ্রোহী প্রার্থী সানা উল্লাহ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আমাকে হয়রানি ও কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতেই নৌকা প্রতীক আগুন দেওয়া হয়েছে। যা ক’দিন আগে থেকেই টের পাচ্ছিলাম। এমন কি পুলিশ দিয়েও আমার নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। পরে বিষয়টি মৌখিকভাবে থানায় জানানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সামনেই নৌকা প্রতীক পুড়ানো ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে আমার কর্মীরা কিছুই জানে না। আওয়ামী লীগ প্রার্থী এলাকায় বলে বেড়াচ্ছেন তিনি তিনটি কেন্দ্র দখল করে ভোট মারবেন। এই বিষয়ে উপজেলায় অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা জানান সানা উল্লাহ।
রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া বলেন, প্রতীক পুড়ানোর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাইনি। যেহতু এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেবেন।