করোনার ধাক্কা কাটিয়ে না উঠতেই আরেক সমস্যা দেখা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার শিল্প কারখানাগুলোতে। দিনের বেশির ভাগ সময়ই থাকছে না গ্যাস। একই সঙ্গে গ্যাসের চাপ কম থাকায় বন্ধ থাকছে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ক্যাপটিভ পাওয়ারগুলো। এতে চরমভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে শিল্প কারকাখানাগুলোতে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন কারখানার মালিকরা।
আড়াইহাজারে শতাধিত গ্যাস নির্ভর শিল্পকারখানা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মিথিলা টেক্সটাইল, ফকির ফ্যাশন, ভাই ভাই স্পিনিং, সানমুন টেক্সটাইল, রায়া স্পিনিং, নান্নু টেক্সটাইলের মত বস্ত্র ও পোশাক খাতের স্পিনিং, উইভিং, ডাইং, প্রিন্টিং, ফিনিশিং ও ওয়াশিং কারখানার মত অসংখ্য শিল্প কারকখানা। ভুক্তভোগী শিল্প মালিকরা জানান, জ্বালানি হলো শিল্পের প্রধান চালিকাশক্তি। গ্যাস না থাকলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বেকারত্ব বেড়ে যাবে। এ সমস্যা দ্রæত সমাধান করতে হবে। নতুবা সার্বিক অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
দেশের অন্যতম লীড প্লাটিনাম সনদপ্রাপ্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান মিথিলা টেক্সটাইলের পরিচালক মাহবুব খান হিমেল বলেন, প্রায় এক মাস ধরে গ্যাস সংকট চলছে, এক সপ্তাহ ধরে সেই সংকট আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যেখান ১৫ পিএসআই এর অধিক চাপ দরকার সেখানে ১ পিএসআই এর নিচে নেমে এসেছে । দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সময়মতো কাপড়/পোশাক রপ্তানি করা সম্ভব হবেনা ফলে ক্রেতার আস্থা ও বানিজ্য হারাবে বাংলাদেশ, সেই সাথে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ব্যহত হয়ে ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। তাই তিনি মাননীয় এ সমস্যার দ্রæত ও স্থায়ী সমাধান করে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ সকল শিল্প-প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন জানিয়েছেন।
ভাই ভাই স্পিনিং মিলের স্বত্তাধিকারী লাক মিয়া জানান, গ্যাসের চাপ কম থাকায় কারখানার উৎপাদন কমে যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে চরম বিপর্যয়ে পরতে হবে মিল মালিকদের, ইতি মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে, যে উৎপাদন হচ্ছে তাতে শ্রমিকের বেতন দেওয়া দুস্কর হয়ে পরেছে। ফলে হাজারো শ্রমিক চাকরি হারাবে, বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে ।
সানমুল সাইজিংয়ের স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ সেলিম ভূইয়া জানান, কয়েক মাস ধরেই গ্যাসের চাপ নিয়ে এ সমস্যা চলছে। গ্যাসের চাপ না থাকলে প্রায় সময়ই কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে। তাই দ্রæত এর সমাধান প্রয়োজন।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড রূপগঞ্জ অঞ্চলের ম্যানেজার মিজবাউর রহমান জানান, সারাদেশেই গ্যাসের সাপ্লাই কম। অন্যদিকে যেখান থেকে গ্যাস সাপ্লাই হচ্ছে আড়াইহাজার উপজেলা হচ্ছে সর্বশেষ প্রান্ত। ফলে অন্য মিল কারখানাগুলো গ্যাস টানার পরে আড়াইহাজার এলাকায় এসে গ্যাসের চাপ তেমন থাকে না। সরকার এলএনজি (লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস) আমদানীর মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য কাজ করছে। আশা করছি দ্রæততম সময়ের মধ্যে গ্যাসের এ সংকট সমাধান হয়ে যাবে। তখন মিল কারখানাগুলো স্বাভাবিক উৎপাদন করতে পারবে।