ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নরসিংদীর মাধবদীববাসি ও নাকাল সাপ্তাহিক হাট। তিন দিন ধরেই বাতাসের সঙ্গে অঝোর ধারায় ঝরছে বৃষ্টি। আর টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে স্থবিরতা নেমে এসেছে শিল্প শহর মাধবদীর মানুষের জনজীবনে। হেমন্তের এই দিনে ঝরছে শ্রাবণের ধারা। মনে হচ্ছে এ যেন বর্ষাকাল! আর টানা বৃষ্টিতে বিপাকে এ সর্বস্তরের মানুষ। সোমবার এতিহ্যবাহি সাপ্তাহিক হাটের অবস্থা হয়ে পড়েছে নাকাল। কাদা আর বৃষ্টির পানির কারণে হাটে পাইকারী ও খুচরা দোকানীরা পসরা সাজাতে পারেনি।
এছাড়া বৃষ্টির কারণে অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা, বিশেষ করে মাধবদীর পাইকারচর,মহিষাশুড়া, চরদিঘলদী সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।
এসব এলাকা মেঘনা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় পানি জমে গেছে বিভিন্ন গ্রামে। ফলে অঞ্চলটির দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষদের আয়রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরম আর্থিক সংকটে পড়ে খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
রোববার সকাল থেকে বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা বেড়ে যায়। ফলে চরম ভোগান্তি উপেক্ষা করে মাধবদীর হাটে এসেছে সবজি বিক্রেতারা। কিন্তু ক্রেতা সমাগম না থাকায় বৃষ্টিতে জুবুথুবু হয়ে বসে সময় পারকরছেন বিক্রেতারা।
এছাড়া দেখা গেছে বিদ্যালয় গুলোতে উপস্থিতি ছিলো অনেকাংশে কম। অপরদিকে বৃষ্টি আর শীতের কারণে আটকা পড়ায় অনেককেই কিছুটা বিলম্বে কর্মস্থলে যোগ দেন।
মাধবদীর স্থায়ী বাসিন্দা আবু কালাম জানান, গত তিনদিন ধরে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে চরমক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পরেছে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কৃষক আলী আজগর জানান, বৃষ্টির কারণে গবাদি পশু নিয়েও অনেক বিপাকে পড়েছেন তারা।
এদিকে বৃষ্টির সঙ্গে বয়ে যাওয়া ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। শীতের গরম জামাকাপড় পরে ছাতা মাথায় দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন মানুষ।
এদিকে গত তিন দিন কাজ না থাকায় চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছে খেঁটে খাওয়া মানুষেরা। সকালে কমেছে বৃষ্টি। কিন্তু তিন দিন ধরেই আকাশে মেঘ থাকায় দেখা মিলছে না সূর্যের দেখা। এ শহরে বৃষ্টির কারণে সর্বত্র দেখা দিচ্ছে অচলাবস্থা। বৃষ্টির কারণে প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। এ অবস্থায় শহরের রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। বৃষ্টির মধ্যে যারা জরুরি কাজের জন্য বের হয়েছেন তাদের অনেককেই গরম কাপড় ও রেইনকোট পরতে দেখা গেছে।