মেয়েরা দেশে এখন নানা ক্ষেত্রে নেতৃত্বের পর্যায়ে এগিয়ে এলেও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ না হওয়ায় নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘শুধু আইন করলে হবে না, মানসিকতাটাও এখানে বদলাতে হবে। পরিবর্তন আনতে হবে চিন্তা-চেতনায়। আর সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে, বিশ্বাস।’
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
এ অনুষ্ঠানে পাঁচ নারীকে চলতি বছরের রোকেয়া পদক দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে যুক্ত হন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। তার পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা পদক তুলে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন যে জিনিসটা সব থেকে আমাদের জন্য পীড়াদায়ক, সেটা হচ্ছে- মেয়েদের উপর সহিংসতা। যদিও আমরা আইন করে দিয়েছি। যেমন আমরা ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবং পারিবারিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আইন করে দিয়েছি। কিন্তু শুধু আইন করলে হবে না, মানসিকতাটাও এখানে বদলাতে হবে। পরিবর্তন আনতে হবে চিন্তা-চেতনায়। আর সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে, বিশ্বাস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীরা শুধু ভোগের বস্তু না, নারীরা সহযোদ্ধা ও সহযোগী- এই বিশ্বাসটা করতে হবে। আর সহযাত্রায় চলতে হবে এবং সমান অধিকার দিতে হবে। এটা হল বাস্তবতা।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় আরও অনেক নারী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা অবদান রেখে চলেছেন। সরকার প্রতি বছর তাদের সম্মানিত করবে।
একজন নারী হিসেবে বেগম রোকেয়া আমাদের আদর্শ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, সমাজের অচলায়তন ভেদ করে বেগম রোকেয়া যদি শিক্ষার আলো না জ্বালতেন তাহলে আজকে আমরা যতদূর এগোতে পেরেছি, এটা পারতাম না। আমাদের পথ দেখিয়ে গেছেন তিনি। আর তিনি আমাদেরকে আলোর পথে যাত্রা শুরু করিয়েছেন।
বেগম রোকেয়ার প্রতি স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে স্বপ্ন বেগম রোকেয়া দেখেছিলেন, আমি মনে করি- আমরা অনেকটাই সে স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। রংপুরের পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়ার বাড়িটি সংরক্ষণ করে সেখানে নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং তার নামে রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।