বিএনপির কর্মসূচিতে জনস্রোতে ভীত হয়ে সরকার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আবারও মামলা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দেশের ৩২টি জেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিএনপি দাবি আদায়েরর প্রক্রিয়ায় জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে। এতে সরকার ভীত হয়ে পড়েছে। পতনের ভয়ে আওয়ামী লীগ হামলা করছে, গুলিবর্ষণ করছে, গায়েবী মামলাও দিচ্ছে।
রবিবার (২ জানুয়ারি) খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ৩২ জেলায় অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার ঘটনা তুলে ধরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, এসব কর্মসূচিগুলোর মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই দেশের জনগণ একবারও চায় না যে, এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকুক এবং গণতন্ত্রকে ধবংস করুক। এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, দেশনেত্রীর মুক্তি দেশের মানুষ এই মুহূর্তে চান এবং তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে এই মুহূর্তে পাঠাতে চায়।
সিরাজগঞ্জ, হবিগঞ্জ, ফেনী, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, গাজীপুর, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠিত সমাবেশগুলোতে পুলিশি বাধা, হামলার ঘটনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে প্রায় ৩২ জেলায় এই দাবিতে আমরা সমাবেশ করেছি। এই সমাবেশগুলোতে জনগণের যে অংশগ্রহণ এটাতে উদ্বিগ্ন হয়ে ভীত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী-নেতা এবং সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তারা প্রতিটি কর্মসূচি বাধা প্রদান করেছে। কখনো কখনো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সরাসরি আক্রমণ, কখনো আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দিয়ে আক্রমণ করে আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, অতীতের মতো নির্যাতন, গুম, খুন, গুলিবর্ষনের মধ্য দিয়ে তারা গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম যে লড়াই তাকে ব্যাহত করতে চায়। আমরা একথা দৃঢ়তার সাথে স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে এবং তারা রাজপথের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাদের দাবি আদায় করবে, গণতন্ত্রকে পুণরুদ্ধার করবে, দেশনেত্রীর মুক্তি এবং একই সঙ্গে তাকে সুচিকিৎসার বিদেশে প্রেরণ করতে সক্ষম হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পরবর্তি কর্মসূচি স্থায়ী কমিটির সোমবারের বৈঠকে নেয়া হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের সমাবেশে আপনারা দেখেছে, পত্রিকাগুলোতে এসেছে যে, সমস্ত অস্ত্রগুলো অবৈধ। একটা ছবি দেখলাম যে, ইম্প্রোর্টেড, চক চক করছে নতুন রিভলবার। দেশি নয়, বিদেশি রিভলবার। এই যে দেশের মধ্যে অস্ত্রধারীরা প্রকাশ্যে এসে গেছে- এটা শুভ লক্ষণ নয়।
তিনি বলেন, এই অস্ত্রধারীরা হলো, সিরাজগঞ্জের মধ্যপাড়ার বায়েজিদ, দত্তবাড়ীর সুজয়, কোল গয়লার সুমন ও জনি চারটি পিস্তরল নিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে হামলা চালায় যা পত্রিকায় ও মিডিয়াতে ছবি প্রকাশিত হয়ে্ছে। এরা সবাই ছাত্রলীগ ও যুব লীগের সদস্য। অথচ এই অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। সন্ত্রাস করবে তারা, আবার তা্রা বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে অস্ত্রধারীর গ্রেফতার ও তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মশিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও ঢাকা মহানগরের সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।