শীত মানেই সবজির সমাহার। পুষ্টিতে ভরপুর এই সকল শবজির অন্যতম শিম। শীতকালীন সবজি হিসেবে আমাদের বাসা-বাড়িতে আধিপত্য বিস্তার করে থাকে শিম। নানা গুণে অধিকারী এই শিম সমাধান দিতে পারে আপনার বিভিন্ন রোগের।
তাই রোগ থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিনের খাবার প্লেটে রাখতে পারেন শিম। এবার চলুন জেনে নেয়া যাক শিম মুক্তি দিতে পারে এমন ১০টি রোগের বিষয়ে।
১. অন্ত্রনালীর রোগ: শিমে এমাইনো এসিড, হাইড্রোসায়নিক এসিড, ভিটামিন সহ অনেক উপাদান রয়েছে। এ সকল উপাদান বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা নিরাময় করে। ডায়রিয়া সারাতেও ভাল কাজ করে শিম। এসব সমস্যায় ১০০-১৫০ গ্রাম শিম দিয়ে ঝোল রান্না করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
২. কোষ্টকাঠিন্যে: শিমে অনেক খাদ্য আঁশ রয়েছে। নিয়মিত শিম খেলে কোষ্টকাঠিন্য থাকে না। এমনকি নিয়মিত শিম খেলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
৩. চোখ উঠা: বিভিন্ন ধরণের জীবানুর কারনে দেখা দিতে পারে চোখের বিভিন্ন সমস্যা। যার একটি চোখ উঠা। চোখ উঠলে শিম পাতার রস ১-২ ফোঁটা করে প্রতি চোখে দিলে উপকার পাওয়া যায়।
৪. ডায়াবেটিস: শিম পুষ্টি জোগায় আবার নিয়মিত শিম খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। এছাড়াও শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে শিম।
৫. চুল পড়া: চুল পড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। শিম একটি খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ সবজি। শিম চুল পড়া কমিয়ে দেয় এবং চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
৬. হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে: সাধারণত আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাসসহ বিভিন্ন কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে আমাদের। শিমের বীজে এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উভয় উপাদান বিদ্যমান। এই উভয় উপাদানই হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করে।
৭. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে: শিমের দানায় ভিটামিন বি৬ উৎকৃষ্ট পরিমাণে রয়েছে। তাই শিম বীজ আমাদের স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি করে।
৮. নাক দিয়ে রক্ত পড়া: যে কোন সাময়িক কারনে বা রক্ত পিত্তের কারনে নাক দিয়ে রক্ত পড়লে ৫০০ মিঃগ্রাম শিম বীজ গুড়া পানি সহ সকাল বিকাল খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৯. গলা ফোলা: গলা ফোলে গেছে এমতাবস্থায় ২০-৩০ ফোঁটা শিম পাতার রস পানিতে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১০. ত্বক ফাটা: শীতকালে ত্বক ফাটা একটি সাধারণ সমস্যা। তবে এই সমস্যার সমস্যা করে দিতে পারে শিম। শীতে শরীরের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় ফলে ত্বকলে খসখসে প্রাণহীন মনে হয়। তেল বা প্রসাধনী ব্যবহার না করলে অনেকের ত্বক ফেটে যায়। কিন্তু নিয়মিত শিম খেলে ত্বক মোলায়েম থাকবে এবং ত্বকের রোগ বালাই থেকে বেঁচে থাকবে।
এছাড়াও শিম প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারে। শিমের বীজে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে। যারা মাছ গোস্ত খেতে পছন্দ করেন না, তারা শিমের বীজ খেলে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হবে। একই সাথে গর্ভবর্তী মা ও শিশুর পুষ্টি ঘাটতি পূরণে শিমের জুড়ি নেই। তাই গর্ভবর্তী মায়েদের বেশী পরিমাণ শিম খাওয়া উচিত।