করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ কমে যাওয়ায় আবারও খুলল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) প্রথম ধাপে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১ মার্চ খুলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো।
গত ২১ জানুয়ারি করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। আর ১৩ জানুয়ারি থেকে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, যা পরে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে, এ বিষয়ে গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ ২০ নির্দেশনা দিয়ে একটি আদেশ জারি করেন।
যেসব নির্দেশনা মেনে চলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-
১. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেসব শিক্ষার্থী কোডিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছে সেসব শিক্ষার্থী সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশমুখসহ অন্যান্য স্থানে কোডিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়গুলো ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শন।
৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী-অভিভাবকের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ।
৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন/ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে শিখন-শেখানো কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
৫. শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণকৃত অ্যাসাইনমেন্টগুলোর কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে।
৬. শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন ইতোপূর্বে প্রেরিত নির্দেশনা মোতাবেক প্রণয়ন করতে হবে।
৭. শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সব প্রবেশ/প্রস্থান মুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশ/প্রস্থান মুখ থাকে, সেক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ/প্রস্থান মুখের ব্যবস্থা করা।
৮. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা।
৯. প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে, সেই বিষয়ে তাদের শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং দিতে হবে।
১০. প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখা।
১১. প্রতিষ্ঠানের সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ এবং আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করা।
১২. প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রাখা।
১৩. প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কেউ প্রবেশ/অবস্থান/প্রস্থানের সময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন করা।
১৪. প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্য কেউ সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
১৫. প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দ্বারা হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা।
১৬. শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা। এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক ৩ (তিন) ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা।
১৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা এবং কোথাও পানি জমে না থাকে, তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।
১৮. প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করা।
১৯. প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত করা।
২০. প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এতদসংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।