চলমান ইউক্রেন সংকটের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়ে বিশ্বকে নতুন উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৪৫ সালের পর কোনো যুদ্ধে আর এ অস্ত্রের ব্যবহার হয়নি। রাশিয়ার পরমাণু নীতিতে এ ধরনের অস্ত্রকে কেবল ‘ডিটারেন্ট বা প্রতিরোধক’ হিসেবে ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। চার ধরনের পরিস্থিতির কথা সেখানে বলা হয়েছে, যখন এ অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে।
• রাশিয়া বা তার কোনো মিত্রের সীমানা লক্ষ্য করে যদি অন্য কোনো দেশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
• রাশিয়া বা তার কোনো মিত্রের ওপর যদি পারমাণবিক অস্ত্র বা অন্য কোনো ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়।
• রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ কোনো সরকারি বা সামরিক স্থাপনায় হামলার কারণে যদি এর পারমাণবিক সক্ষমতা হুমকির মুখে পড়ে।
• প্রথাগত অস্ত্র ব্যবহার করে যদি রাশিয়ায় আগ্রাসন চালানো হয় এবং তাতে যদি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে।
বিবিসি লিখেছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি কিছুটা হলেও বেড়েছে, তবে এখনও তার মাত্রা তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
পুতিনের হুমকি যদি শুধু ভয় দেখানোর জন্যও হয়, তারপরও হিসাবের গড়বড় হওয়ার একটি ঝুঁকি সবসময়ই থাকে। কোনো এক পক্ষ যদি অন্য পক্ষের পদক্ষেপের ভুল ব্যাখ্যা করে, অথবা কোনোভাবে যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন তা বিপজ্জনক দিকে মোড় নিতে পারে।
এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে তার পারমাণবিক ফোর্সকে ‘বিশেষভাবে সতর্ক’ করার নির্দেশ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এটিকে রাশিয়ার কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীর জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা বলে মনে করা হচ্ছে।
টেলিভিশনে সম্প্রচার হওয়া এক বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভকে পুতিন বলেন, ন্যাটো জোটের শীর্ষ দেশগুলোর নেতারা আমাদের দেশের ব্যাপারে আগ্রাসী মন্তব্য করছেন। আমি তাই প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সামরিক বাহিনীর প্রধানকে নির্দেশ দিচ্ছি ‘রাশিয়ান আর্মি ডিটারেন্স ফোর্স’কে যুদ্ধাবস্থার সতর্কতায় রাখতে।
পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী বাহিনী সম্পর্কে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ জানায়, কৌশলগত এই বাহিনীগুলো রাশিয়া ও তার মিত্রদের ওপর আক্রমণ প্রতিরোধ করার উদ্দেশে তৈর হয়েছে। সেই সঙ্গে, পরমাণু অস্ত্রের যুদ্ধে আগ্রাসনকারীদের পরাস্ত করাও এর উদ্দেশ্য।