পটুয়াখালির কলাপাড়া উপজেলায় দেশের বৃহত্তম কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার (২১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টা ৪৮ মিনিটে উপজেলার ধানখালীর পায়রাতে দেশের বৃহত্তম ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে প্রথম সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নেরও ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা থেকে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। বেলা ১১টায় কোল জেটিতে ২০০ নৌকা থেকে পতাকা নাড়িয়ে ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে তাকে অভিবাদন জানানো হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি মূল নিয়ন্ত্রণ কক্ষ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।
করোনা মহামারির মধ্যে টুঙ্গিপাড়ার বাইরে এই প্রথম দেশের কোথাও সফর করছেন শেখ হাসিনা। তার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণে পটুয়াখালির কলাপাড়ার ধানখালীর পায়রাতে সর্বাধুনিক আলট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন তিনি।
গতকাল রবিবার (২০ মার্চ) বিকেলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হবে। প্রতিটি ঘর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে।
গত ৫০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশে এমন একটি অতি আধুনিক বৃহত্তম প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ‘আমাদের সবার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি একটি আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল টেকনোলজি পাওয়ার প্ল্যান্ট।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার করেছি, দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় এবং সারা বিশ্বে ১১তম দেশ হিসেবে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে।
পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ৬৬০ মেগাওয়াট ইউনিটটি ২০২০ সালের মে মাসে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়, এটি ৪০০ কেভি পায়রা-গোপালগঞ্জ পাওয়ার ট্রান্সমিশন ব্যবহার করে এবং দ্বিতীয়টি গত বছরের ডিসেম্বরে উৎপাদন শুরু করে।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান বলেন, পায়রা সমুদ্রবন্দর সংলগ্ন পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে এ এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান হয়েছে।
এলাকায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে এবং জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে কেন্দ্র করে সরকারের একটি বিশাল পরিকল্পনা রয়েছে।
কমিশনার বলেন, ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াও আরও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে এবং এখানে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও একটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এই অঞ্চলটি আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে একটি পাওয়ার হাবে পরিণত হবে।