প্রচণ্ড গরমে ডাক্তাররা সব সময়ই অতিরিক্ত পানি ও পানি জাতীয় খাদ্য খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু অতিরিক্ত ঘাম ঝড়ে গেলে শুধু পানি সেই ঘাটতি পূরণ করতে পারেনা। তাই দুপুরের গরমে ক্লান্তি দূর করতে ফলের জুস বা শরবত ব্যাপক সহায়ক হিসেবে কাজ করে বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছে।
আপনিও ফলের জুস বানিয়ে কর্মস্থলে বা স্কুলে যাওয়ার সময় নিয়ে যেতে পারেন যখন কান্তি বোধ হবে তখন ব্যাগ থেকে বের করে খেয়ে নিবেন। ফলের জুস অনেকের খুবই পছন্দ। কিন্তু প্রতিদিন তো বাসায় ফলের জুস তৈরি করা সম্ভব হয় না। তাই দোকান থেকেও বিভিন্ন ফলের জুস কিনে নিতে পারেন।
আমের ভরা মৌসুম টেনেটুনে দুই থেকে আড়াই মাস। তবে রসাল এই ফলপ্রেমীদের রসনা মেটাতে বাজারে মেলে আমের রস বা জুস এবং পানীয় বা ড্রিংকস। ভালো চাহিদা থাকায় ধীরে ধীরে পণ্যটির বাজার বড় হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে যত ধরনের ফলের জুস বা ড্রিংকস রয়েছে, তার মধ্যে আমেরই রাজত্ব ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নব্বইয়ের দশকে দেশীয় কম্পানির হাত ধরে প্রথম বোতলজাত ফ্রুট ড্রিংকের স্বাদ পায় বাংলাদেশের মানুষ। শুরুতে পণ্যটি জনপ্রিয় করতে কম্পানিগুলোকে বেশ বেগ পেতে হয়। পরে অবশ্য স্বাদ ও মানের জন্য দ্রুত বাজার বাড়ে।
আম ছাড়াও আনারস, পেয়ারা, আপেল, কমলা, লেবুসহ বিভিন্ন ফলের জুস ও ড্রিংকস রয়েছে বাজারে। একসময় শুধু কাচের বোতলে জুস বিক্রি হলেও বর্তমানে প্লাস্টিকের বোতল ও ট্রেটা প্যাকও বেশ জনপ্রিয়। শুধু শহর নয়, গ্রামগঞ্জের দোকানেও এখন পাওয়া যায় ফলের জুস ও ড্রিংকস।
বারডেম হাসপাতালের পুষ্টিবিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো বলেন, ‘গরমে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর ডিহাইড্রেশনে ভোগে। প্রচুর পিপাসা বোধ হয়। এটা থেকে নানা স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই গরমে সারাদিনে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। স্বাভাবিক পানি পানের পাশাপাশি ডাবের পানি, সালাইন মিশ্রিত পানিও উপকারী। এ ছাড়া বিভিন্ন ফলের রসও শরীরকে ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। ফলের জুসে থাকা পুষ্টি উপাদান শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেয়। এতে গরমে শরীর ভালো থাকে। ‘
বাংলাদেশ নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াটেটিকস ফোরামের ডায়াটেশিয়ান মুহাম্মদ আরিফ ইকবাল বলেন, ‘যেকোনো ফল সাধারণত শরীরের জন্য উপকারী। আর গ্রীষ্মে তো প্রাকৃতিক বডি কুলারের ওপর নির্ভর করতে হবে। আর গ্রীষ্মকালীন কুলার বলতে আমরা বুঝি মৌসুমি ফলের রস। ফলের রস শরীরের প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইটের উৎস। এটি শরীরের বিষাক্ত তরল বের করে শরীরকে টক্সিনমুক্ত রাখে। ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অন্য পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলের রস গরমে শরীর চাঙা রাখে। শক্তি দেয়, সতেজ করে। ‘
বাজারে নানা ব্র্যান্ডের জুসই পাওয়া যায়। তার মধ্যে কোনটি ভালো, কোনটি খারাপ সংশয় আছে। এ ক্ষেত্রে স্কয়ারের ‘আরাম’ জুসটি এর মধ্যেই বেশ ভোক্তাপ্রিয় হয়েছে। চিনিমুক্ত, রংবিহীন ও প্রিজারভেটিভহীন এই ফলের রসটি অনেকেই বেছে নিচ্ছে তাদের পানীয় হিসেবে।