বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫০ অপরাহ্ন
ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তান আমলের ৩৬৯টি আইন বাংলাদেশে চালু রয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
জাতীয় সংসদে আজ বৃহস্পতিবার সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্নোত্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহতি পূর্বে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে প্রচলিত ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তান আমলে প্রণীত বর্তমানে চালু আইনের সংখ্য্যা ৩৬৯টি। সংবিধানের ১৪৯ অনুচ্ছেদ দ্বারা প্রচলিত সকল আইনের কার্যকারিতা অব্যাহত রাখা হয়। ১৯৭৩ সালের বাংলাদেশ ল’জ রিভিশন অ্যান্ড ডিক্লারেশন অ্যাক্ট-১৯৭৩ প্রণয়নের মাধ্যমে স্বাধীনতাপূর্ব আইনগুলোকে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও অভিযোজন করে বহাল রাখা হয়েছে।
সংসদে মন্ত্রীর দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রচলিত ব্রিটিশ ভারতের আইনের সংখ্যা ২২২টি এবং পাকিস্তান আমলের আইনের সংখ্যা ১৪৭টি। ব্রিটিশ ভারতের প্রথম আইন হচ্ছে ১৭৯৯ সালে প্রণীত দ্য উইলস অ্যান্ড ইনটেসট্যাসি রেগেুলেশন। পাকিস্তান আমলে প্রণীত শেষ আইন হচ্ছে দ্য গভর্নমেন্ট অ্যান্ড লোকাল অথরিটি ল্যান্ডস অ্যান্ড বিল্ডিংস (রিকভারি অব পজেশন) অর্ডিন্যান্স-১৯৭০।
সরকারি দলের মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে হাইকোর্ট বিভাগের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
গণফোরামের মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ২০১৫ সালের বেতন ও ভাতাদি আদেশ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা শ্রেণি বিভাজনের পরিবর্তে বেতন স্কেলের গ্রেডভিত্তিক পরিচিত হবেন। সরকারের বিদ্যমান আইন, বিধি ও আদেশ নির্দশনায় শ্রেণি উল্লেখ থাকায় শ্রেণির পরিবর্তে গ্রেড উল্লেখ করে ওইসব আইন, বিধি, আদেশ ও নির্দেশনা সংশোধনের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শহিদুল ইসলাম বকুলের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারি চাকুরিজীবীদের সার্ভিস বুক এবং পেনশন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ডিজিটালভিত্তিক করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনলাইনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন পরিশোধের কার্যক্রম চলছে।
নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানান, দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছের সংখ্যা ৬৪টি। এসব মাছ রক্ষায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সারা দেশে খামারের সংখ্যা ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯০টি। এর মধ্যে গাভীর খামার ২ লাখ ৭০ হাজার ২৯০, ছাগল/ভেড়ার খামার ৮ লাখ ৭৩ হাজার ২০০ এবং পোল্ট্রি খামার ১ লাখ ৯৫ হাজার ১০০টি।
সরকারি দলের মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে শ ম রেজাউল করিম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা, সমুদ্রের পানির উচ্চতা এবং লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে উপকূলীয় মৎস্য সম্পদের ওপর ক্রমশ নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া নদীগুলোয় লবনাক্ত পানি অনুপ্রবেশের ফলে মিঠা পানির মাছ ও প্রাথমিক উৎপাদনশীলতায় পরিবর্তন ঘটছে। উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে মাছের আবাসস্থল, বিচরণক্ষেত্র, অভিপ্রায়ন ও প্রজনন প্রভাবিত হচ্ছে।
জলবায়ুর ধারাবাহিক ক্রম অবনতির ফলে মৎস্য সম্পদের ওপর নানা ধরনের বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মাছের অনেক আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হচ্ছে। মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মাছের প্রজাতি-বৈচিত্র্যেও। এ ছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনাবৃষ্টি ও অপর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল, প্রজননক্ষেত্র ও লালনক্ষেত্র হ্রাস পাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমান্বয়ে নীচে নেমে যাওয়ায় পুকুর-দিঘীর পানির স্তর কমে যাচ্ছে। বাৎসরিক পুকুরগুলো মৌসুমি পুকুরে রূপান্তরিত হচ্ছে। আবাদি পুকুরের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মৎস্য খাতের ওপর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার লক্ষ্যে সরকার পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে বলেও মন্ত্রী জানান।
