খাবার পরিবেশনের ধরন খাবারের স্বাদে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে- অক্সফোর্ডের এই গবেষণার পর পেনসিলভানিয়াভিত্তিক ওয়েবস্টুরেস্টস্টোর (বিশ্বব্যাপী সর্ববৃহৎ অনলাইন রেস্টুরেন্ট পরিষেবা প্রদানকারী) ফুড প্লেটিং টেকনিকের কিছু বিষয় তুলে ধরে। যেমন ফুড প্লেটিং। ফুড প্লেটিং টেকনিকের একটি প্রচলিত নিয়ম হলো কাস্টমারের দিক থেকে প্লেটকে একটি ঘড়ির জোনের মতো ভাগ করে চিন্তা করতে হবে। যেখানে স্টার্চ বা কার্বোহাইড্রেট থাকবে ঘড়ির ৯টা থেকে ১২টার ভেতর। ভেজিটেবল বা সালাদ থাকবে ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে। আর প্রোটিনের অবস্থান হবে ৩টা থেকে ৯টার মধ্যে।
গ্রাহকের মনস্তত্ত্ব অনুযায়ী ডিশে চিংড়ি, স্কুইড মাশরুম এবং বাইট সাইজ জাতীয় উপাদানগুলো বেজোড়সংখ্যক হলে তা খাবারকে আরও মুখরোচক করে তোলে।
সাদাফ হুসেইনের (জনপ্রিয় একজন শেফ, খাবারবিষয়ক লেখক এবং ফুড স্টাইলিস্ট) ভাষ্য মতে, মেন্যু ডিজাইন করার সময় খাবারের বাড়তি অংশ অপচয় এবং উপাদানের পুনর্ব্যবহারের দিকে সতর্ক থাকতে হয়। মেন্যুর ডিশের বিষয়টির পরই লক্ষ করতে হয় ফুড প্লেটিংয়ের ওপর। মানুষ শুধু মুখ দিয়েই খাবারের স্বাদ নেয় না বরং চোখের মাধ্যমেও কোনো খাবারকে গ্রহণ করে বা প্রত্যাখ্যান করে। তাই চোখের তৃপ্তির জন্যও প্রেজেন্টেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
খাবার কতটা সুস্বাদু তা বিবেচ্য নয় বরং এটি একটি অনাকর্ষণীয় প্লেটে পরিবেশন করা হলে কেউ খাবার খেতে প্রলুব্ধ হয় না। দ্য রেস্টুরেন্ট টাইমস তাই কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে উদ্বুদ্ধ করে।
প্লেটের আকার
বড় প্লেটে খাবার পরিবেশন করলে সৃজনশীলতার সঙ্গে কাজ করার জায়গা পাওয়া যায়। তবে মনে রাখতে হবে, প্লেটটি এত পূর্ণ করার দরকার নেই যাতে কোনো জায়গা অবশিষ্ট না থাকে এবং উপচে পড়ছে দেখায়।
প্লেটের আকৃতি
বিভিন্ন আকারের প্লেট বিভিন্ন খাবারের জন্য উপযুক্ত। গোলাকার প্লেট স্বাস্থ্যকর, হৃদয়গ্রাহী, ভারী খাবারের জন্য উপযুক্ত এবং খাবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার চিত্র প্রমাণ করে। আবার কৌণিক প্লেট খাবারকে স্মার্ট এবং আধুনিক চেহারা দেয়। আধুনিক ডেজার্ট বা সুস্বাদু খাবারের আইটেমগুলো উপস্থাপনে তাই এগুলো ব্যবহৃত হয়।
রং
বিভিন্ন রং গ্রাহকদের মস্তিষ্কে ভিন্ন রকম বার্তা পাঠায়। মনে রাখতে হবে, খাবারের জন্য ব্যবহৃত জিনিসপত্র নীল রং হলে এটি মানুষের মনস্তত্ত্বে ডায়েট এবং নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসকে সক্রিয় করে।
খাবারের জন্য ব্যবহৃত ডিনারসেট সাদা রং হলে তা খাবারে রঙের বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তোলে। আরও সমসাময়িক এবং নান্দনিকতার জন্য উত্তম কালো রঙের প্লেট, ট্রেতে পরিবেশন করা।
রুল অব থার্ড
ছবি তোলার কায়দায় রুল অব থার্ডের কথা শুনেছেন অনেকেই। ছবিতে মূল সাবজেক্টকে যদি মাঝে রাখা হয়, তাহলে তার চারপাশের বিষয়বস্তু ছবির দর্শকের কাছে আকর্ষণ হারায়। রুলস অব থার্ড এ থেকে বেরিয়ে চারপাশসহ ছবিটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করে। একই নিয়ম ফুড প্লেটিংয়ের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়। প্লেটটিকে ফ্রেম হিসেবে ভেবে প্লেটের কেন্দ্রবিন্দুকে (মেইনডিশ আইটেম) মাঝে রাখার পরিবর্তে প্লেটের বাম বা ডান দিকে রেখে পুরো খাবার সাজানো হলে তা দেখতে বা খেতে একঘেয়ে মনে হয় না।