1. khandakarshahin@gmail.com : Breaking News : Breaking News
  2. laxman87barman@gmail.com : laxman barman : laxman barman
  3. shahinit.mail@gmail.com : narsingdi : নরসিংদী প্রতিদিন
  4. msprovat@gmail.com : ms provat : ms provat
  5. hsabbirhossain542@gmail.com : সাব্বির হোসেন : সাব্বির হোসেন
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫০ অপরাহ্ন

বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০

বাড়তি দামের এলপিজিতে দিশেহারা ভোক্তা

ডেস্ক রিপোর্ট | নরসিংদী প্রতিদিন
  • প্রকাশের তারিখ | সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১৪৩ পাঠক

রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক এলাকায় বাজার থেকে এলপিজি সিলিন্ডার উধাও। এলপিজির সংকটকে পুঁজি করে দফায় দফায় দাম বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। আসন্ন রমজানে দাম আরও বাড়াতে ব্যবসায়ীরা বাজারে এই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে বলে মনে করছেন ভোক্তারা। খবর-অবজারভার

এছাড়া, কিছু এলাকায় এলপিজি সিলিন্ডার পাওয়া গেলও সরকার ঘোষিত নির্ধারিত দামের চেয়েও ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। ১২ কেজি গ্যাসের একটি সিলিন্ডার তারা বিক্রি করছেন এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকায়। ৩৫ কেজির এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি করছেন চার হাজার ৮০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকায়।

রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকার গ্যাস বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

২০২১ সালের এপ্রিল থেকে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কমিশনের সর্বশেষ নির্ধারিত মূল্য তালিকা ঘোষণা করে গত ০২ জানুয়ারি। ঘোষণা অনুযায়ী, ১২ কেজি গ্যাসের একটি সিলিন্ডারের জন্য খুচরা পর্যায়ে গ্রাহককে দিতে হবে এক হাজার ৪৯৮ টাকা।

এর আগে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ছিল এক হাজার ২৩২ টাকা। এক লাফে ২৬৬ টাকা বাড়ানো হয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মগবাজার, মোহাম্মদপুর, আজিমপুর, লালবাগ, বাসাবো, মালিবাগ, খিলগাঁও এলাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে এবং ঢাকার বাইরে বগুড়া, রাজশাহীসহ বেশি কিছু এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবেশক ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে দু-একটি কোম্পানির বাইরে কোন এলপিজি সিলিন্ডার নেই। আগে যেখানে তারা ছয়-সাতটি কোম্পানির এলপিজি সিলিন্ডার রাখতেন, এখন তারা দু-তিনটি কোম্পানির কাছ থেকে সিলিন্ডার গ্যাস পাচ্ছেন। খালি সিলিন্ডার পড়ে আছে অনেক বিক্রেতার দোকানে।

এলপিজি সিলিন্ডারের দামি বৃদ্ধির বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহকারী ডিলাররা সিলিন্ডার বিক্রি করছেন না। বেশি দামে তারা বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে এলপিজি সিলিন্ডার কিনছেন।

রাজধানীর কমলাপুর এলাকার বন্ধন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক বলেন, ‘লিকুইড সংকটের কারণে চলতি মাস জুড়েই গ্যাসের সরবরাহ কমিয়েছে কোম্পানিগুলো। মাসের শেষে এসে তা একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তার থেকে বেশি দামে কোম্পানির কাছ থেকে আমাদের কিনতে হচ্ছে। ১২ কেজির একটি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে এক হাজার ৪৯৮ টাকা। কিন্তু কোম্পানির কাছ থেকে আমার কিনতে হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৬৫০ টাকায়। আমরা বিক্রি করছি এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৭৫০ টাকায়। আমাদের খরচসহ কিছু লাভ করতে হয়। কোম্পানি থেকে বেশি দামে কিনলে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করবো কিভাবে?’

ভোক্তাদের অভিযোগ, গ্যাসের দাম বাড়াতে গত কয়েক মাস থেকে কৃত্রিম একটি সংকটের কথা বলা হচ্ছে। আর এই সংকটকে পুঁজি করে গ্যাসের দাম নিজেদের মতো করে বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। গত মাসে ১২ কেজি গ্যাসের সিলিন্ডারের বিইআরসি নির্ধারিত দাম ছিল এক হাজার ২৩২ টাকা। কিন্তু ওই সময় এক হাজার ৪৫০ থেকে দেড় হাজার টাকায় গ্যাস কিনতে হয়েছে। সরকার দাম বাড়ানোর আগেই বিক্রেতারা নিজেরাই দাম বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

তবে গ্রাহকরা চাহিদা মোতাবেক বেশি দাম দিয়েও এলপিজি সিলিন্ডার পাচ্ছেন না। দু-তিনটি কোম্পানির সিলিন্ডার পাওয়া গেলেও তা ৩০০-৫০০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ক্রেতারা।

সবকিছু দাম এমনিতেই বেড়েই চলেছে, এর উপর এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধিতে ভোক্তারা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।

বাসাবো এলাকার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের জিম্মি করে ব্যবসা করছেন। এলপিজির দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও সে দামে কোথাও গ্যাস পাওয়া যায় না। বাড়তি দামে কিনতে চাইলেও এলপিজি সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কেউ পেলেও নেয়া হচ্ছে বাড়তি দাম। তাহলে সরকার দাম বেধে দিলে লাভ কি হচ্ছে।’

বেশির ভাগ কোম্পানিই সরবরাহ কমিয়েছে বলে জানাচ্ছেন ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা।

বাজারে বেশির ভাগ এলপিজি কোম্পানির গ্যাস না পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন এলপিজি অপারেটররা। তারা বলেন, এলপিজির কাঁচামাল আমদানিতে ঋণপত্র বা এলসি খুলতে না পারায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঋণপত্র জটিলতা না কমলে আসন্ন রমজানে পরিস্থিতি আরও তীব্র হতে পারে।

সারা দেশে এলপিজি সিলিন্ডারের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৫০ লাখ। ২৬টি বেসরকারি কোম্পানি এসব গ্যাস বাজারজাত করে। ডলার সংকটে পণ্য আমদানিতে চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে না পারায় বেশির ভাগ কোম্পানি ব্যবসায়িকভাবে লোকসানে পড়েছে। এরই মধ্যে সব কোম্পানির বিপণন ৪০-৫০ শতাংশ কমে গেছে।

দেশের বাজারে এলপিজি গ্যাস মার্কেট শেয়ার সবচেয়ে বেশি বসুন্ধরা এলপিজি সিলিন্ডারের। ঋণপত্র খুলতে জটিলতা হওয়ায় বৃহৎ বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানটির বিপণন কার্যক্রম কমেছে।

বসুন্ধরা এলপিজির চিফ অপারেটিং অফিসার (ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং) এম এম জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বাজারে এলপিজি সিলিন্ডারের সংকট চলছে এটা সত্য। কারণ এলসি খুলতে না পারায় কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। বসুন্ধরার সেলস ভলিউম এরই মধ্যে ৪০-৫০ শতাংশ কমে গেছে। এলসি সহযোগিতা না পেলে সামনে এ পরিস্থিতি আরো তীব্র হতে পারে।’

গত কয়েক বছর ধরেই দেশে নতুন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া বন্ধ রয়েছে। এতে রাজধানীসহ দেশের বড় একটি অংশের মানুষ এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। দিন দিন বড় হচ্ছে এলপিজি সিলিন্ডারের বাজার। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই ভোক্তা পর্যায়ে এই গ্যাসের দাম বেড়েই চলেছে। এলপিজি মূলত একটি আমদানিনির্ভর পণ্য। এটি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।

বিইআরসি জানায়, বেসরকারি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি প্রায় ১২৫ টাকা, যা এত দিন প্রায় ১০৩ টাকা ছিল। গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার প্রায় ৭০ টাকা, যা এত দিন ৫৭ টাকার কিছু বেশি ছিল। তবে সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির দাম বাড়ানো হয়নি।

কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘সরকার এলপিজি সিলিন্ডারের যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তার থেকে বেশি নেওয়া দণ্ডণীয় অপরাধ। গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম নিলে আইন অনুযায়ী প্রতিকারের ব্যবস্থা আছে। কেউ নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে গ্যাস কিনলে সরাসরি বিইআরসিতে অথবা জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারবেন। এছাড়া ক্যাবের কাছে অভিযোগ করলেও আমরা বিষয়টি তদারকি করতে পারব।’

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বেশি নেওয়ার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশে আমাদের অভিযান চলছে। গত বৃহস্পতিবার সারাদেশে অভিযান চলেছে। রোববারও সারাদেশে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়েছেন। দাম বেশি নেওয়ার প্রমাণ পেলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ভোক্তারা যদি মনে করেন তারা প্রতারিত হয়েছেন, তাহলে প্রমাণসহ সারাদেশের ভোক্তা অধিদপ্তরের যেকোনো কার্যালয়ে সরাসরি এসে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। এছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (www.dncrp.com) গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। আমরা ভোক্তা স্বার্থে নতুন অভিযোগ ওয়েব পোর্টাল খুলেছি। সেখানে সহজেই ভোক্তারা অভিযোগ দিতে পারবেন। আমাদের ‘ভোক্তা বাতায়ন’ শীর্ষক হটলাইন ১৬১২১ নম্বরে কল দিয়েও ভোক্তারা সেবা পেতে পারেন। প্রমাণসহ অভিযোগ করলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’



সংবাদটি শেয়ার করিুন

এই পাতার আরও সংবাদ:-



বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০



DMCA.com Protection Status
টিম-নরসিংদী প্রতিদিন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে শাহিন আইটি এর একটি প্রতিষ্ঠান-নরসিংদী প্রতিদিন-
Theme Customized BY WooHostBD