নরসিংদীর রায়পুরায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে পলো উৎসব। প্রতিবছর এখানে শীতের শেষে ফাল্গুন মাসে দেশি মাছ ধরার এই উৎসব হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার পলাশতলী ইউনিয়নের খলিলাবাদ গ্রামে শতবর্ষী বিলে চলে এই উৎসব।
বৃহস্পতিবার এই বিলে মাছ শিকারে নামেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। ধরা পড়ে পুঁটি, শোল, বোয়াল, মাগুর, গজার, বেড়া, রুই, শিং, কইসহ দেশীয় সব মাছ। তবে আগের বছরের তুলনায় এ বছর মাছের উপস্থিতি ছিল কম। অনেকে শূন্য ঢালা নিয়ে ফিরে গেছেন বলে হতাশা জানিয়েছেন।
ষাটোর্ধ্ব আমিনুল ইসলাম বলেন, শত বছরের বেশি সময় ধরে খলিলাবাদ বিলে মাছ শিকারিরা পলো দিয়ে মাছ ধরে আসছেন। তবে বিলের পানি ও মাছের ওপর ভিত্তি করে বছরে দুইবারও উৎসব হয়। বৃহস্পতিবার এই বিলে সাত-আট কেজি ওজনের শোল মাছ শিকার হয়েছে।
সকাল থেকে সারা দিন মাছ শিকার করেন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফেসবুকে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে শখের বশে বন্ধুর সঙ্গে মাছ ধরতে এসেছি। এই প্রথম পলো দিয়ে মাছ ধরলাম। কিন্তু দুটি শোল আর কিছু পুঁটি ও খলসে ছাড়া আর কিছুই পাইনি।
গাজীপুর থেকে আসা আহাম্মেদ আলী বলেন, ‘আমি এসেছি গাজীপুর থেকে। গত সাত বছর ধরে প্রতিবছর এখানে আসি মাছ শিকার করতে। এবারও এসেছি। মাছ পাওয়া বা না পাওয়া বড় বিষয় না। সবাই মিলে আনন্দ করছি, হৈ-হুল্লোড় করছি। দুটো গজার মাছ পেয়েছি। তাতেই আমি অনেক খুশি।’
পলাশ থেকে মাছ ধরতে আসা সোলায়মান বলেন, মাঝারি সাইজের শোল মাছ পেয়েছি একটি। আনন্দ লাগছে। বেঁচে থাকলে আগামীতেও আসব।
মিলটন মিয়া নামে আরেক মাছ শিকারি বলেন, ‘আমি একটি বড় বোয়ালসহ ছোট মাছ পেয়েছি। টাকা দিলেও এই মাছ আমি কিনতে পারব না। এটি শখের জিনিস। আমি বাড়ি নিয়ে পরিবারকে নিয়ে মজা করে খাব।’
পলাশতলী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এস এম জাহাঙ্গীর প্রধান বলেন, প্রতিবছরই এই বিলে উৎসবমুখর পরিবেশে পলো-বাওয়া উৎসব হয়। এই বিল সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাই এখানে সারা বছরই মাছ ধরতে পারেন।