নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক সেতু। তবে স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কর্তৃক নির্মাণ করা এসব সেতু কয়েক বছরেও কোনো কাজে আসছে না স্থানীয়দের। তারা মনে করছেন, সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেই অপ্রয়োজনীয় জায়গায় সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এক থেকে দেড় যুগ আগে উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর তৈরি করা হয়নি কোনো সংযোগ সড়ক, করা হয়নি অ্যাপ্রোচ। বর্তমানে সেতুগুলোতে দেখা দিয়েছে একাধিক ভাঙন। যার কারণে নির্মাণের পর আজও সেতুগুলোর কোনো সুফল পাননি তারা।
এদিকে অনেক আগেই দায়সারাভাবে সেতুগুলো নির্মাণ করে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুগুলোর নথিপত্রও চাপা পড়েছে পুরোনো ফাইলের ভেতরে। অথচ পেরিয়ে গেছে অনেক দিন। কিন্তু সেতুগুলো আছে আগের মতোই।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অপ্রয়োজনীয় ও অব্যবহৃত এসব সেতু সবচেয়ে বেশি নির্মাণ করা হয়েছে বিন্নাবাইদ ইউনিয়নে।
বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ভাউয়ালেরচর উত্তরপাড়া গ্রামের ইয়াসিন মাস্টারের বাড়ির কাছে জঙ্গলবিশিষ্ট একটি স্থানে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৬ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের অপ্রয়োজনীয় একটি সেতু। আড়িয়াল খাঁ নদীর একপাশে রাস্তা ও অ্যাপ্রোচবিহীন জঙ্গলময় স্থানে সেতুটি নির্মাণের পর পেরিয়ে গেছে প্রায় সাত বছর।
একই ইউনিয়নের দীঘলদীকান্দা গ্রামের স্লুইসগেট সংলগ্ন স্থানে একই অধিদপ্তরের আরেকটি সেতু মূল সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় প্রায় ২০ বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এই সেতুটির পাশাপাশি নির্মাণ করা হয় একটি স্লুইসগেট। ফলে নির্মিত স্লুইসগেটের ওপর দিয়ে রাস্তা পাকাকরণ হওয়ায় আগের সেতুটি অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। সেতু এলাকার প্রকল্পের ব্যয় সংবলিত কোনো সাইনবোর্ড বা নেমপ্লেট না থাকা ও সংশ্লিষ্ট অফিসে কোনো কাগজপত্র না পাওয়ায় সেতুটির নির্মাণ ব্যয় জানা যায়নি।
এ ছাড়াও অ্যাপ্রোচ ছাড়াই বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের সুতিঘাট খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে আরেকটি সেতু। আমলাব ইউনিয়নের পাহাড় উজিলাব এলাকায় ফসলি জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে একটি সেতু। সব সেতুই নির্মাণ করা হয়েছে জনবিচ্ছিন্ন স্থানে।
বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজিয়া সুলতানা স্বপ্না বলেন, কিছু সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক ও মাটি ভরাট করে দিলে হয়তো মানুষ চলাচল করতে পারবে।
বেলাবো উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোসা. নায়েমা তাবাছসুম শাহ অপ্রয়োজনীয় স্থানে এসব সেতু নির্মাণের ব্যাপারে বলেন, আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে সেতুগুলো নিয়ে কিছু করা যায় কিনা এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।