রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় রোববার ও সোমবার দু’দিনের সকল ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করেছে রাবি কর্তৃপক্ষ। শনিবার (১১ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এ ঘোষণা দেন।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৫০-২০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার শনিবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে রোববার ও সোমবারের সব ধরনের পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাস হেলপার ও স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে উভয় পক্ষের দুই শতাধিক আহতের খবর পাওয়া যায়।
ওই ঘটনায় প্রায় ৫০ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ বগুড়া থেকে বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন। এ সময় বাসে বসাকে কেন্দ্র করে চালকের সহকারিদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। পরে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকে পৌঁছালে আবার বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় স্থানীয় এক দোকানদার এসে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়ান।
একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে ওই দোকানদারের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এক জোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। তখন শিক্ষার্থীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া করেন।
সংঘর্ষে বেশ কিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এরমধ্যে বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। তবে কারা এই আগুন দিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সুলতান উল ইসলাম বলেন, আমাদের অন্তত দুই’শ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সে কাভার করা যাচ্ছে না। আমরা তাদের বাস দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পাঠাচ্ছি।
বিনোদপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা কমপক্ষে ৩০টি দোকান পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের হামলায় কয়েকজন দোকানদার আহত হয়েছেন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।