নরসিংদীর শিবপুরে মনি আক্তার (২৮) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ বাড়ির বারান্দার গ্রিলে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মনির স্বামী ইসমাইল হোসেন (৪০), ভাসুর শামীম ও শ্বশুর রফিজ উদ্দিনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
শনিবার সকালে উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের শালুরদিয়া গ্রামে স্বামীর বাড়ির বারান্দা থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্বজনরা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শিবপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেজবাউদ্দিন এবং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার।
স্থানীয়রা জানান, ১৪-১৫ বছর আগে শালুরদিয়া গ্ৰামের মৃত শরিয়ত উল্লাহ মোক্তারের মেয়ে মনি আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের রফিজ উদ্দিনের ছেলে ইসমাইলের প্রেমের সম্পর্ক হয়। ওই সম্পর্ক বিয়ের মাধ্যমে পরিণতি লাভ করে। বিয়ের পর তাদের সংসার ভালোই চলছিল। ঘর আলো করে তাদের সংসারে আসে তিন মেয়ে ইসমা (১১), তাবাসসুম (৯) ও তাসনিন (৬ মাস)। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে বাবা রফিজ উদ্দিনের সঙ্গে ছেলে ইসমাইলের পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এর জেরে বাবার দেয়া মামলায় একাধিকবার জেলও খেটেছেন ইসমাইল। ওই কলহেরই জেরে শুক্রবার রাতের কোনো একসময় মনিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহ ঘরের বারান্দায় গ্রিলের সঙ্গে ওড়না দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।
মনি আক্তারের মা বিলকিস বেগম জানান, আমার মেয়েকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।
পুটিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মাহবুব দৈনিক বাংলাকে বলেন, সংবাদ পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে যাই। এলাকার লোকজন মনির স্বামী, ভাসুর (স্বামীর সৎ ভাই) ও শ্বশুরকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। আমরা এলাকাবাসী এই ঘটনায় হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।
শিবপুর মডেল থানার ওসি-তদন্ত আবুল ফায়েজ বলেন, ‘আমরা সংবাদ পেয়ে স্বামীর ঘরের বারান্দায় বসা অবস্থায় গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো মনির মরদেহটি উদ্ধার করি। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।’