ঈদে ক্রেতারা বছরের অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি কাপড় কেনেন। ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতারা যাতে প্রতারণার শিকার না হন, সে জন্য এবার আগেভাগে নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ভোক্তার সঙ্গে কোনো ধরনের ছলচাতুরীর আশ্রয় নিলে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে গত বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তৈরি পোশাকের বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও বুটিক হাউসের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯-বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এমন বার্তা দেয়া হয়। শুক্রবার অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সভায় অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে বলা হয়, ঈদ উপলক্ষে একই পোশাকের দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় বাড়িয়ে দেয়া, মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করা, এক ধরনের পোশাকে ভিন্ন ভিন্ন দামের ট্যাগ লাগানো, ছিট কাপড়ের ক্ষেত্রে মিটারের পরিবর্তে গজের ব্যবহার এবং আসল বলে নকল কাপড় বিক্রির অভিযোগ পেলে ভোক্তা আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ছাড়া কারখানা থেকে পোশাকের মোড়কের গায়ে খুচরা মূল্য না লেখা, খুচরা মূল্য ঘষামাজা বা কাটাকাটি করে বেশি মূল্য নির্ধারণ, পুরোনো মূল্যের ওপর নতুন স্টিকার লাগিয়ে বেশি দাম নেয়া, শতভাগ কটন ঘোষণা দিয়ে তাতে ভেজাল দেয়া, কাটা-ফাটা পোশাক বিক্রি করা, সময়মতো কাপড় পরিবর্তন করে না দেয়া এবং টাকা পরিশোধে লম্বা সারিতে অপেক্ষমাণ না রাখার বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের তাগিদ দেয়া হয়।
নকল পণ্যের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘অন্যান্যবারের মতো এবারও কাপড়ের বাজারে আমাদের তদারকি থাকবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিদেশি পোশাক ও প্রসাধনীর ক্ষেত্রে আমদানিকারকের নাম ও সিল থাকতে হবে।’
শপিংমলগুলোতে অনিয়ম পেলে মার্কেট কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে কিছু ব্যবসায়ী আমাদের দেশে আসেন। তারা বাসা ভাড়া নিয়ে ভেতরে–ভেতরে টার্গেট কাস্টমারের কাছে বিদেশি কাপড় বিক্রি করেন। এ ধরনের কার্যক্রম দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে দেয়া হলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা চাই, সবাই আইন মেনে ব্যবসা করুক। ভোক্তারা যেন ন্যায্যমূল্যে পণ্য পান।’
সভার স্বাগত বক্তব্যে ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কাপড়ের গুণগত মান যেন ভালো থাকে। যাতে বিদেশি যারা আসেন, তারা যেন কাপড়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারেন। কাপড়ের দামের ট্যাগ যেন কারখানায় লাগানো হয়। বিক্রয়কেন্দ্রে যেন দামের ট্যাগ লাগানো না হয়। এর ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, আড়ং, আর্টিসান, অঞ্জনস, টপ টেন, লুবনান, নগরদোলা, রং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন পোশাকের ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।