নরসিংদীতে ‘প্রেমিকা’র টিকটক আইডির পাসওয়ার্ড নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে এক তরুণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছুরিকাঘাতের চার দিন পর মারা গেছেন। তাকে ছুরিকাঘাত করা কিশোর ঘটনার পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
সোমবার বিকেলে উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামে ছুরিকাঘাতে আহত হন শরীফ মিয়া (২১)। তাকে প্রথমে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে মৃত্যু হয়েছে তার।
নিহত শরীফ মনোহরদী উপজেলার চালাকচর ইউনিয়নের বাঘবের গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তাকে ছুরিকাঘাত করে চন্দন বাড়ি ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামের আতিকুল ইসলামের ছেলে শাকিল। সে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, মাধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে শরীফের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি শরীফ প্রবাসে চলে গেলে মেয়েটির সঙ্গে শাকিলের সম্পর্ক হয়। শাকিল ওই মেয়েটির টিকটক আইডির পাসওয়ার্ড জানত। সে সুবাদে শাকিল ওই আইডি থেকে বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করত, যা নিয়ে শরীফের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
স্বজনরা জানান, শরীফ ওই আইডি থেকে ভিডিও আপলোড করতে নিষেধ করেন শাকিলকে, ওই আইডির পাসওয়ার্ডও চান। শাকিল তা দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সোমবার দুপুরে শাকিলের সঙ্গে শরীফের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায় শাকিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে শরীফকে জখম করে পালিয়ে যায়।
শাকিলের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাকিল এবার মাধুপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা অংশ নিয়েছে। তবে এ ঘটনার পর থেকে শাকিল পরীক্ষা না দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার বাড়ির কেউ এ ঘটনা নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
শরীফের বাবা বলেন, শাকিল আমার ছেলেকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমার ছেলেকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আজ আমাদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেল শরীফ। তার হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, টিকটককে কেন্দ্র করে শরীফ নামে এক তরুণ আহত হয়েছিলেন। ঘটনাটি নিয়ে একটি মামলাও আছে। ছেলেটি আজ মারা গেছে শুনেছি। মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। সে অনুযায়ী মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।