দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া নরসিংদীর উদীয়মান আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানের নামাজে জানাজার দলীয় নেতাকর্মীসহ হাজারো মানুষের ঢল নামে।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় মেহেরপাড়া ইউনিয়নের খালপাড় ঈদগা মাঠে এই নামাজে জানাজায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন, নরসিংদী-১ সদর আসনে সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হিরু (বীর প্রতীক), নরসিংদী-২ পলাশ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খাল দিলীপ এমপি, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসরাত উদ্দিন আহমেন মনির প্রমুখ। মাহবুব হত্যাকারীদের আগামী সাতদিনের মাধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান নেতারা।
জানাজা নামাজের আগে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরু, পুলিশ প্রশানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মাহবুব চেয়ারম্যানকে হত্যা একদিনে করা হয়নি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মাহাবুব হত্যার বিচার করতে হবে। খুনের আসল আসামিদের ধরুন, নকল আসামিদের ধরবেন না।
মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত পৌনে ১২টার দিকে মাধবদী থানার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগিরথপুর এলাকায় দুর্বৃত্তরা নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে মাহবুবুল হাসান মাহাবুবকে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আরো দুজন আহত হয়েছেন। নিহত মাহবুবুল হাসান ভগিরথপুর গ্রামের ইমাম উদ্দিনের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা।
হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতে ভগিরথপুর মাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার চেয়ারম্যান মার্কেটে অবস্থিত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে ৮ থেকে ১০ জন দলীয় নেতা-কর্মীকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন মাহবুবুল হাসান। পথে ৭ থেকে ৮ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত তাদের ওপর হামলা করে।
এ সময় গুলি ও ধারাল অস্ত্রের আঘাতে মাহবুবুল হাসান (৪০), ভগিরথপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে শ্রমিক লীগ নেতা সাঈদ হাসান পাপ্পু (৩৮) ও ফরহাদ মিয়া (৩২) আহত হন।
স্থানীয়রা আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহবুবুল হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।
মাহবুব চেয়ারম্যানের ছোট ভাই হাফিজুল হাসান ও হাফেজ অলিউল্লাহ বলেন, ‘ভাইয়ের জনপ্রিয়তার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার প্রতিপক্ষের লোকরা ভয় পেয়েছে, কারণ তিনি বেঁচে থাকলে আগামী নির্বাচনে তারা বিজয়ী হতে পারবে না। তারা বহুবার ভাইকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। তারা ভাইয়ের জন্য মাদক কারবারি, চাঁদাবাজি করতে পারে না। এ জন্য তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভাই হত্যার বিচার চাচ্ছি। এই হত্যার বিচার না হলে ভালো মানুষ জনগণের সেবা করতে আসবে না।’