‘ছাগলকাণ্ডে’র পর থেকে জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী। তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান। অথচ তিনি কার্যালয়ে আসছেন না। বাড়িতেও নেই। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
রোববার রায়পুরা উপজেলা পরিষদে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নিলেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ অনুপস্থিত ছিলেন। তার কক্ষটিও তালাবদ্ধ ছিল।
পরিষদের কর্মকর্তারা জানান, লায়লা কানিজ লাকী ঈদের দুইদিন আগে সর্বশেষ অফিস করেন। ঈদের ছুটি শেষে এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়ে আসেননি। ছাগলকাণ্ডে তিনি বেশ বিব্রত। সাংবাদিকরাও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব পেতে তার কার্যালয়ে এসে খোঁজাখুঁজি করছেন।
রায়পুরার ইউএনও ইকবাল হাসান বলেন, ঈদের পর উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকী তার কার্যালয়ে আসেননি। রোববার সকালে অনুষ্ঠিত উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায়ও তিনি অংশ নেননি। ব্যক্তিগত কারণে তিনি আসতে পারবেন না বলে জানিয়ে ছিলেন। কিন্তু কবে আসবেন তাও বলেননি, ছুটিও নেননি।
২০২২ সালে সরকারি তিতুমীর কলেজের বাংলা বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে এসেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হন লায়লা কানিজ। আছেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে। ছাগলকাণ্ডের পর তার নামে থাকা সম্পদের বিবরণ শুনে স্থানীয়রা হতবাক হয়ে যান।
তারা বলেন, সংসদ সদস্য রাজিউদ্দীন আহমেদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে লায়লা কানিজ লাকী সবার নজরে আসেন। আর উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তিনি রায়পুরার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একজন হয়ে উঠেছেন। মরজাল এলাকায় পৈতৃক বাড়িতে একটি ডুপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করেছেন তিনি। এলাকায় প্রায় দেড় একর জমিতে ‘ওয়ান্ডার পার্ক ও ইকো রিসোর্ট’ নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন লায়লা কানিজ।
রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসাইন বলেন, তিনি টাকার পাহাড় গড়েছেন। তার স্বামীর অবৈধ টাকার প্রভাবেই সংসদ সদস্য রাজিউদ্দীন আহমেদে তাকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। তাকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।