নরসিংদীতে কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তাহমিদ ভূইয়া (১৪) নামের এক শিক্ষার্থী ও ইমন হোসেন (২১) নামের একজন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড় তরোয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
[caption id="attachment_49040" align="alignnone" width="1024"] rbt[/caption]
নিহত তাহমিদ ভূইয়া সদর উপজেলার চিনিশপুর নন্দীপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে ও নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং নিহত ইমন হোসেন পলাশ উপজেলার দড়িরচর এলাকার বাসিন্দা। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ছোড়া শর্টগানের ছড়রা গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
[caption id="attachment_49008" align="alignnone" width="1024"] rbt[/caption]
নিহত দুজনেরই বুক ঝাঁঝরা হয়ে আন্তঃরক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান ও সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মাহমুদুল কবির বাশার।
[caption id="attachment_49026" align="alignnone" width="1024"] rbt[/caption]
জানা গেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত বেলা ৩টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করতে জড়ো হতে থাকে। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ে।
এঘটনায় নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাহমিদ ভূইয়া, ইমন হোসেন, অনিকসহ অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৩৫ জনকে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহমিদকে মৃত ঘোষণা করে। আহমিদ ভূইয়াকে জেলা হাসপাতাল ও ইমন হোসেনকে সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসের প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন তাহমিদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আজকে (বৃহস্পতিবার) স্কুল বন্ধ। খবর পেয়ে আমরা জানতে পারি তাহমিদ ভূইয়া কোটাবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে জেলখানা মোড় এলাকায় গুলিতে নিহত হয়েছে। সে চিনিশপুর নন্দীপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার মায়ের নাম তায়্যিবা ভূইয়া। সে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, আনুমানিক ৪টার দিকে নিহত তাহমিদকে হাসপাতালে আনা হয়। তার বুক ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। বিকেল ৪ টা থেকে পৌনে ৬টা পর্যন্ত ৩৫ জন আহতকে আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২৯জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে আর দুইজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এরমধ্যে শিবপুরের শ্রীফুলিয়া এলাকার অনিক (৩৩) নামের একজনের অবস্থা খুবই আশংকাজনক। বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ দেড় থেকে দুশত আন্দোলনকারী লাঠিসোঁটা আহতদেরকে নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করে। একসঙ্গে এতো রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে। এরমধ্যে আন্দোলনকারীরা হাসপাতালের দরজা জানালা ভাঙচুর করেছে।
সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মাহমুদুল কবির বাশার বলেন, ইমন হোসেনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকে অসংখ্য ছড়রা গুলির চিহ্ন রয়েছে। বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ বলেন, কোন এলাকায় নিহত হয়েছে? কীভাবে হয়েছে? আমার জানা নেই। আমি নিশ্চিত না।