নরসিংদীতে ‘বিনা কারণে’ হাবিব রহমান ফাহিম নামে এক প্রবাসীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে তার পরিবার। তবে পুলিশ বলছে, প্রথমে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে আটক করা হলেও পরে ‘ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায়’ তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় ফাহিম বাড়ির পাশের সুরুজের মোড় থেকে মুরগির খাবার আনতে যান। সেখান থেকে তাকে আটক করে রায়পুরা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
গত ১৮ জুলাই রায়পুরা পৌর শহরের শ্রীরামপুর রেলগেট এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংর্ঘষ হয়। পৌর এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় একাধিক পুলিশ সদস্য আহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়।
ফাহিমের পরিবার জানায়, ২০২৩ সালে সৌদি আরব যান নরসিংদীর রায়পুরার মহেশপুর ইউনিয়নের বেগমাবাদ ঝাওকান্দি গ্রামের বাসিন্দা হাবিব রহমান ফাহিম। কিন্তু বছর না ঘুরতেই নানা রোগে আক্রান্ত হন। অসুস্থ শরীর নিয়ে কাজ করতে না পেরে চলতি বছরের এপ্রিলে চিকিৎসার জন্য দেশে ফিরে আসেন।
ফাহিমের মা মনি জামাল বলেন, ‘নিরপরাধ ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে জেলে পাঠাল। কত মিনতি করলাম, পুলিশ ছেড়ে দিল না। আমার ছেলেকে আপনারা মুক্তির ব্যবস্থা করে দিন। কথা দিচ্ছি সে বিদেশে চলে যাবে। সংসারে স্বামী অসুস্থ, বড় ছেলে ব্যবসায় লোকসান করে পথে বসার মতো অবস্থা। আমাদের জীবিকা নির্বাহ করার একমাত্র ভরসা ফাহিমের উপার্জন। সে চিকিৎসার জন্য ছুটিতে বাড়িতে চলে আসায় তার উপার্জনও বন্ধ।’
এ বিষয়ে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ বলেন, ‘ফাহিমের মা আমার কাছেও এসেছিলেন। কিন্তু তার ছেলের বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে গত মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
মহেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন চান মিয়া খাঁ বলেন, ‘ফাহিমকে গ্রেপ্তারের দিন তাকে ছেড়ে দিতে আমিও পুলিশকে সুপারিশ করেছিলাম; কিন্তু পুলিশ ছাড়েনি। তাকে থানায় নিয়ে যায়। ফাহিম বিদেশে থাকেন। তিনি কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। সৌদি আরব থেকে ছুটিতে দেশে এসেছেন।’