মিয়ানমারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াগি ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের কারণে সৃষ্ট বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছে ৮৯ জন। বন্যায় দেশটির ৯টি অঞ্চল ও প্রদেশের অর্ধশতাধিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা দেশটির প্রায় ১৬ শতাংশ।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির ফলে উত্তর ভিয়েতনাম, লাওস, থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারে বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি হয়। যার ফলে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
মিয়ানমারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিহতদের মধ্যে নাইপিদো তাও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১৬৪ জন, মান্দালয় অঞ্চলের ১৩৪ জন, শান প্রদেশের ৭৮ জন, কায়িন প্রদেশের পাঁচজন, বাগো অঞ্চলের দুজন এবং আইয়ারওয়াদি অঞ্চলের একজন রয়েছেন।
বন্যায় ২ হাজার ১৪৯টি ভবন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত, ৩ হাজার ৪৫৫টি আংশিক এবং ৫৪৬টি স্কুল পানিতে তলিয়ে গেছে ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ৫৩৩টি সড়ক ও সেতু, ২ হাজার ৪৮৯টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং ৯৯টি যোগাযোগ টাওয়ার ধ্বংস হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪৩ জন মানুষ। ধ্বংস হয়েছে ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬১ একর ফসলের খেত এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৯৮টি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে।
গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী ছিল এই বন্যা। রাতের বেলা ভারী বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢল হতাহতের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিষ্কার করতে, স্বাস্থ্যসেবা, খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণ করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, উদ্ধার সংস্থা এবং বাসিন্দারা একসঙ্গে কাজ করছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে যে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির ফলে মিয়ানমারে ৮ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (ওসিএইচএ) শনিবার বলেছে, “সবচেয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে বাড়িঘর, রাস্তা, সেতু, স্কুল, ধর্মীয় উপাসনালয়, কৃষি জমি, পানির উত্স এবং বৈদ্যুতিক পরিষেবাও ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে।”