নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচন ২১ ডিসেম্বর। এ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটাররা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকে বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে থাকা আওয়ামী লীগের দোসরদের নেতৃত্বে যেমন ছিল, তার চেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় হাঁটছে এবারের নির্বাচন। ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে একটি মহল মরিয়া হয়ে উঠেছে। এবার গুঞ্জন উঠেছে বিনা ভোটে কমিটি ঘোষণা করার। তবে আড়ালে কে করছে এই কাজ, কেন কোণঠাসায় চেম্বার সদস্যরা, তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজালের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এ জেলায় ব্যবসায়ীদের বৃহৎ সংগঠন নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে দুটি শ্রেণিতে ভোটার রয়েছেন ২৪৪৯ জন। এর মাঝে সাধারণ শ্রেণিতে ১৪৭৭ জন ও সহযোগী শ্রেণীতে ৯৭২জন।
চেম্বার সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ২১ নভেম্বর জমাকৃত মনোনয়নপত্রসমূহ নির্বাচন বোর্ড কর্তৃক যাচাই-বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীদের মাঝে সাধারণ শ্রেণিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণে ২১ জনের বৈধ তালিকা গত ২৪ নভেম্বর প্রকাশ করা হয়েছে।
তারা হলেন- মো. মোস্তাকিম হোসেন, মো. কাজিম উদ্দিন, মো. মোতালিব হোসেন, মো. নাজমুল হক ভূঞা, এনামুল হক মনির, মো. দেলোয়ার হোসেন দুলাল, মো. ফয়সাল আহমেদ, আওলাদ হোসেন মোল্লা, মো. মোশারফ হোসেন, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. ছানাউল্লাহ (মিলন), মো. পরেশ সূত্রধর, নাসির আহমেদ রিগান, আব্দুল কাইউম মোল্লা, মো. মনির হোসেন, রাশেদুল হাসান রিন্টু, মো. নাসির উদ্দিন, মো. কাউছার হোসেন, মো. ইলিয়াস মিয়া, মো. রাজিবুল আলম, হাসিব হায়দার।
এছাড়া একই দিন যাচাই-বাছাইয়ের পর সহযোগী শ্রেণিতে ১৪ জনের বৈধ মনোনয়নপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তারা হলেন- মোছাব্বির আহমেদ নাসির, হাসিব আহম্মেদ মোল্লা, মো. সারোয়ার হোসেন ভূঞা (ঝন্টু), আসাদুজ্জামান, মো. সুলতান খাঁন, শোয়াইব আহমেদ, মাসুদ রানা, এনায়েত সারজিদ, মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, মো. মাহমুদুল কবির আমিন, মো. সোহেল সরকার, ইফরান আহম্মেদ মোল্লা (রিপন), ফয়সাল মুন্না, মো. নাসিক আহমেদ।
বিগত সময়ের গ্লানি মুছে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোটের অপেক্ষায় মুখিয়ে আছেন সাধারণ ভোটাররা। কিন্তু বিভিন্ন কূট কৌশলের মাধ্যমে বিনা ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচনের পাঁয়তারা দেখে সাধারণ ভোটাররা আগ্রহ হারাচ্ছেন ব্যবসায়ীদের এই বৃহৎ সংগঠনের নির্বাচনে।
কথা হয় চেম্বারের একাধিক সদস্যদের সঙ্গে। সবাই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তবে এবারের নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় হতাশ হয়ে ক্ষোভ ঝারেন অনেকে।
সুবল দাস নামে এক সদস্য বলেন, নির্বাচনে ভোট দিতে ১০ হাজার টাকা খরচ করে ভোটার আইডি হালনাগাদ করলাম। এখন আমাদের কোনো মূল্যায়ন নেই। নির্বাচনের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।
শফিকুল ইসলাম শেখ তুলু বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নির্বাচনগুলোতে আমি অনেক নিপীড়নের শিকার হয়েছি। এবারের নির্বাচনে কারো কোনো সাড়া পেলাম না। এ সময় নিজেকে বিএনপির কর্মী হিসেবে দাবি করে বলেন, দল থেকেও কোনো মূল্যায়ন পাইনি।
এদিকে, বর্তমান নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এমন একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নানা অজুহাতে পাস কেটে যান ও পরে কথা বলবেন বলে জানান।
তবে কথা হয় চেম্বার নির্বাচনে সাধারণ শ্রেণিতে পরিচালক পদপ্রার্থী মো. মনির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার নির্বাচনের সম্ভাবনা অনেক কম। সবাই মিলেমিশে একটি বিনা ভোটের কমিটি করতে চাচ্ছে।
এদিকে নির্বাচনে অংশ নেয়া যাবে না মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে- এমন ৬ জন এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে বৈধতা পেয়েছেন।
নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য সচিব আবুল হোসেন খান বলেছেন, আমরা মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীদের তালিকা ঝুলিয়ে দিয়েছি। ৭ ডিসেম্বের শনিবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ।