ফুলের নাম রাজকুমারী। Melastomataceae গোত্রের অন্তভুর্ক্ত উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম Tibouchina Urvilleana. রাজকুমারীর আদিনিবাদ ব্রাজিলে। সেখানে Pleroma urvilleanum বেশি পরিচিত। বাংলাদেশে নয়ন তারা ফুলের সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে রাজকুমারীর। সৌন্দর্যের পাশাপাশি উদ্ভিদটির বেশ কিছু ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। দেশ ও বিদেশে উদ্ভিদটি আরো বেশ কয়েকটি নামে পরিচিত। যেমন- বেগমবাহার, গ্লোরী বুশ, বেগুনি গ্লোরী বুশ, লাসিয়ান্দ্রা, মখমল পাতা টিবোচিনা ও মাকড়সা ফুল।
বাসা বাড়িতে বাগান বা পার্কের সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য রাজকুমারীর কদর বেড়েই চলেছে। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা মরজাল ওয়ান্ডার র্পাক ও ইকো রিসোর্টে শোভা পাচ্ছে দুটি রাজকুমারী ফুলের গাছ। যা পার্কে ঘুরতে আসা সকল বয়সী দর্শনার্থীদের বেশ নজর কেড়েছে।
রাজকুমারী গাছের চারা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করছেন ঢাকার সাভার ও কুড়িল বিশ^রোড় সংলগ্ন বেশ কয়েকটি নার্সারী। সেখান থেকে চারা সংগ্রহ করেন মরজাল ওয়ান্ডার র্পাক ও ইকো রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ।
রাজকুমারী একটি চিরহরিৎ গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। গাছের গড় উচ্চতা সাড়ে ৪ মিটার হয়ে থাকে। সরু ডালপালা চারপাশে তিন মিটারের বেশি বিস্তার ঘটে। নীলাভ বেগুনি রঙের একটি ফুলে পাঁচটি পাপড়ি থাকে। ফুলের গড় ব্যাস তিন ইঞ্চি। সরল লোম যুক্ত পাতাগুলো মখমল সবুজ এবং নিচের দিকে হাল্কা লাল রঙ রয়েছে। পাতাগুলো ২ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা ও এক থেকে দেড় ইঞ্চি চওড়া হয়। রাজকুমারী ফুল গ্রীষ্ম ও শরতে বেশি ফোটে। তবে সারা বছরই বিক্ষিপ্তভাবে ফোটে।
পার্কের ম্যানেজার সজীব মিয়া জানান, সূর্যের আলো সহজে পৌঁছায় ও আদ্র মাটিতে এ উদ্ভিব ভালা জন্মে। বীজ ও কার্টিং উভয় পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করা যায়। বসন্তকাল রাজকুমারীর চারা রোপনের উপযুক্ত সময়। সপ্তাহে একদিন পানি দিতে হয়। এতে বৃদ্ধি ভালো হয়।
পার্কে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ইভা সুরভী জানান, ঘুরার ফাঁকে নজরে আসে বেগুনি রঙের একটি ফুল। দেখতে ভীষণ সুন্দর। এর আগে কোথাও দেখিনি। নামও শুনিনি। এখানে এসে ফুলটির সঙ্গে পরিচয় হয়। এই ফুলের চারা সংগ্রহ করে আমার বাগানে লাগাব। আমার সন্তানরাও ফুলটি দেখে অনেক আনন্দিত হয়েছে।
কলেজশিক্ষার্থী অহনা বলেন, প্রথম দেখাতেই বেগুনী রঙের ফুলটির প্রেমে পড়ে গেলাম। এর আগে কোথাও দেখিনি।
সৌন্দর্য্য বর্ধনের পাশাপাশি বেশকিছু ভেষজ গুণ রয়েছে রাজকুমারী উদ্ভিদে জানান, নরসিংদী সরকারি কলেজ বোটানি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তামজিদুল হক। তিনি বলেন, দেশে ফুলটি তেমন পরিচিত নয়। বর্তমানে পার্ক ও উদ্যানতে রাজকুমারী রোপন করা হচ্ছে। এর আদি নিবাস ব্রাজিলে। তবে এশিয়াসহ সারা বিশ্বে জন্মে উদ্ভিদটি। Melastomataceae গোত্রের উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম Tibouchina urvilleana. এতে রয়েছে ভেষজ গুণ।
যেমন- ছত্রাক বা ফাঙ্গাস জাতীয় রোগে রাজকুমারীর পাতা, ফুল ও কান্ড প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে।
#