নরসিংদী জেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও ফুটপাতে কেজিদরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। কেজি দরে তরমুজ কিনে ঠকে যাওয়ার অভিযোগ করছেন ভোক্তাদের অনেকেই।
সরেজমিন জেলার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীত শেষে গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু ফল তরমুজের ব্যাপক চাহিদা। শখ করে তরমুজ কিনছেন অনেকে। কিন্তু বড়বাজার, ভেলানগর মোড়, শাপলা চত্বর, রেলস্টেশন, মাধবদী বাজার, খড়িয়া, আব্দুল্লাহ বাজারসহ জেলার অন্য উপজেলা শহরগুলোয় তরমুজ বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। কিছু ব্যবসায়ী পিস হিসেবে বিক্রি করলেও ওজন দিলে দেখা যায় প্রতি তরমুজের দাম পড়ছে কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে।
এবার কালছে সবুজ ও সাদায় সবুজ দুই রকমের তরমুজ বাজারে চোখে পড়ছে। কিন্তু দামের কারণে এগুলো খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ থেকে পিস কিংবা ক্ষেত চুক্তিতে মালিকের কাছ থেকে তরমুজ কিনছেন আড়তদাররা। তারা এগুলো মজুত করে রাখেন ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে। এসব তরমুজ পরে নরসিংদীসহ ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে পিস হিসেবে। আর বাজারে এনে এগুলোকে কেজি দরে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। কারণ এভাবে বিক্রি করলে তাদের লাভ হয় অনেক বেশি। কিন্তু এর খেসারত গুনতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
সদর উপজেলার মাধবদীতে বড় মসজিদ রোডে তরমুজ কিনছিলেন রাজু আহমেদ নামে মোবাইল ব্যবসায়ী এক যুবক। তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘নামাজ শেষে দোকানে যাচ্ছি। দেখি পথে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। লোভ সামলাতে পারলাম না। দরকষাকষি করে অবশেষে ৭০ টাকা কেজি দরে একটি তরমুজ কিনে নিলাম। ৪ কেজি ৩৭০ গ্রাম ওজনের ছোট্ট ওই তরমুজটির মূল্য দিতে হয়েছে ৩১৩ টাকা।’
রাজু আরও বলেন, ‘গতবার এমন একটি তরমুজ ১২০ টাকায় কিনেছি। এবার আমাদের অনেক ঠকানো হচ্ছে।’
খোকন নামে আরেক যুবক জানান, দুদিন আগে ৬০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি ওজনের একটি তরমুজ কেনেন তিনি। কিন্তু তরমুজটি বাসায় নিয়ে খাওয়া যায়নি। বাইরে থেকে দেখতে অনেক সুন্দর আর বড় মনে হলেও এর ভেতরটা ছিল সাদা। মুখে দেয়ার পর মনে হয়েছে এতে কেমিক্যালও দেয়া। শেষ পর্যন্ত এটি ফেলে দিতে হয়েছে।
খোকন বলেন, ‘গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু ফল শখ করে কিনে ঠকেছি।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নরসিংদীর সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী গ্রাহকদের ঠকানো দণ্ডনীয় অপরাধ। আমাদের দেখতে হবে তরমুজের চালান তারা কীভাবে কিনে আনছে। যদি পাইকারি পিস হিসেবে ক্রয় করে, আর খুচরা কেজি দরে; তবে এটা অপরাধ।’
আসন্ন রমজান উপলক্ষে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তরমুজের বিষয়েও দ্রুত বাজারগুলোয় অভিযান চালানো হবে বলে জানান মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।