নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভায় ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিকের উদ্যোগে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে পুরো রমজান মাসজুড়ে সপ্তাহে দুই দিন এই দামে গরুর মাংস কিনতে পারবেন শহরের বাসিন্দারা। এই মাংশ জনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১শ গ্রাম থেকে তিন কেজি পর্যন্ত।
শুক্রবার ভোরে পৌরসভা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চারটি দেশীয় ষাঁড় জবাই করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় কসাইসহ পৌর শ্রমিকরা। ভোর থেকেই মাংস কিনতে পৃথক পৃথক সারিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন নারী-পুরুষরা। কম দামে মাংস কিনে খুশি মনে বাড়ি ফিরছেন তারা।
বিক্রেতারা জানান, এখানে সঠিক ওজন ও বাজারের চেয়ে কম দামে বিকেল পর্যন্ত গরুর মাংস বিক্রি করা হবে। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার এখান থেকে প্রত্যেক ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিন কেজি করে গরুর মাংস কিনতে পারবেন।
এদিকে পৌর মেয়রের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে শহরবাসী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর শহরের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় মধ্যবিত্ত ও দিনমজুরদের সামর্থ্যের বাইরে চলে গেছে গরুর মাংস। এখন দাম কম হওয়ায় পৌরসভা থেকে মাংস কিনে নিতে এসেছেন তারা।
রিকশাচালক মনির হোসেন বলেন, ‘এখান থেকে কিনে নেয়া তিন কেজি মাংস চার কেজির মতো লাগতেছে। কারণ এই মাংস নিজের চোখের সামনে কসাইরা কেটে দিল। কোনো পানি বা ভেজাল নেই। এখান থেকে ওজনে সঠিক ও বাজারের চেয়ে কম দামে মাংস কিনছে সবাই।’
মাংস কিনতে আসা সাবেক নারী কাউন্সিলর শাহানাজ আক্তার বলেন, ‘সামনে থেকে নিজ চোখে দেখে মাংস কিনে নিলাম। একদম খাঁটি মাংস। সঙ্গে পরিমাণমতো হাড় ও কলিজাও দিয়েছে। তিন কেজি মাংস কিনে ৬০০ টাকা সাশ্রয় হলো। এই রোজায় এমন মহতি উদ্যোগ নেয়ার জন্য পৌর মেয়রের জন্য দোয়া রইল।’
মাধবদী পৌরসভার মেয়র হাজী মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক বলেন, ‘ভালো কাজগুলো মানুষকে দেখানোর জন্য করি না। বরং আল্লাহকে খুশি করার জন্য করে থাকি। সাশ্রয়ী মূল্যে গরুর মাংস বিক্রির এই উদ্যোগটি নিয়েছি আমার পৌরবাসীর স্বার্থে। এই রমজান মাসে সপ্তাহে শুক্র ও মঙ্গলবার, এই দুই দিন পৌরসভা থেকে ১০০ গ্রাম থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ তিন কেজি গরুর মাংস যে কেউই কিনে নিতে পারবেন।’
মেয়র মোশাররফ আরও বলেন, ‘বর্তমান বাজারে ৮০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হয়। এত দাম হওয়ায় অনেকেই মাংস কিনে খেতে পারছে না। সেটি চিন্তা করেই পৌরসভা প্রাঙ্গণে মাংস বিক্রির এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’