নিজস্ব প্রতিবেদক *বুধবার, ১১ জুলাই ২০১৮ খ্রি, নরসিংদী প্রতিদিন
নরসিংদীর রায়পুরায় ৭ বছরের শিশু মামুন হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যায় জড়িত মূল আসামী নাসিরকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। নাসির একই উপজেলার রাজনগর এলাকার জহির ইসলামের ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত নাসির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার ও ঘটনার বিবরণ দিয়েছে। বুধবার( ১১ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন এসব তথ্য জানান। পুলিশ সুপার বলেন, গত ২০ জুন রায়পুরার হাসিমপুর এলাকার প্রবাস ফেরত সুজন মিয়ার ৭ বছর বয়সী ছেলে সুজন খেলতে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। তিনদিন পর (২৩ জুন) দুপুরে প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে শিশুটির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সুজন মিয়া বাদি হয়ে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় প্রথমে হত্যায় জড়িত সন্দেহে জয়নাল মাষ্টারকে আটক করা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত মূল আসামী নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হলে সে জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশু মামুনকে অপহরণ ও দুইদিন অভুক্ত রাখার পর হত্যা করা হয়। সাইফুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, অভিযুক্ত জয়নাল মাষ্টার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারি। সে মূলত কোন এজেন্সির হয়ে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করে। নিহত মামুনের বাবা সুজন মিয়াকে জয়নাল মাষ্টারই সৌদি আরবে পাঠিয়েছিল। এমনকি সুজন মিয়া বিদেশ থেকে সকল টাকা পয়সা জয়নাল মাস্টারের নিকটই পাঠাতেন। সুজন মিয়া দেশে ফিরে সকল টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখেন। সেই টাকার লোভেই নিজের ছেলে ও ভাগিনাকে দিয়ে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে নাসিরকে ভাড়া করে অপরহরণ করা হয় শিশু মামুনকে। পরবর্তীতে কেউ ফোন করেছে কিনা- ফোন বন্ধ কেন এমন তথ্য সুজন মিয়ার কাছ থেকে খোঁজখবর নেন জয়নাল মাস্টার। মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শিশু মামুনকে হত্যা করে লাশটি পরিকল্পনামাফিক সন্দেহ থেকে বাঁচতে নিজের বাড়ির ছাদে এনে ফেলে রাখেন জয়নাল। যাতে কেউ তাকে সন্দেহ করতে না পারে। যা পরবর্তীতে গ্রেপ্তারও হওয়া মূল হত্যাকারি পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবান্দিতে সব তথ্য দেয়।