নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন –
শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯:
ঢাকা-চট্রগ্রাম,ঢাকা-সিলেট রেলপথের নরসিংদী অংশে বেশিরভাগ রেল সেতুতে ফিসপ্লেট, ফিসবল্ট, হিলব্লক ও স্টীলের পাতের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বাঁশ-কাঠের ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ নয় বরং ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতেই সাময়িক এই ব্যবস্থা।
সরেজমিনে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে নির্মাণের পর বর্তমান সরকারের আমলে ঢাকা-চট্রগ্রাম, ঢাকা-সিলেট রেলপথের নরসিংদী অংশে বসানো হয়েছে ডবল লাইন। প্রায় ৪০ কিলোমিটার নরসিংদী অংশের রেলপথ হয়ে যাতায়াত করে থাকে ঢাকা-কিশোরগঞ্জের ট্রেনও। নরসিংদী অংশের এই রেলপথে রয়েছে ছোট বড় ৪১টি সেতু ও কালভার্ট।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব সেতুর বেশিরভাগেই নেই প্রয়োজনীয় নাট-বল্টু, হুক ও ফিশপ্লেট। কোন কোন স্থানে স্লিপারগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে পুরনো বাঁশ। নিয়মিত তদারিক না থাকা ও সংস্কার না করায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় ট্রেনগুলো। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা এলাকাবাসী ও ট্রেনযাত্রীদের।
নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল হক বলেন, নরসিংদীর পুরানপাড়া এবং বাদুয়ার চর এলাকায় দুটি ব্রিজ আছে। ব্রিজ দুটিতে দেখা গেছে লোহার যে সেফটিগুলি থাকার কথা সেখানে বাঁশ দিয়ে সেফটি দেওয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে এখানে বেশ কয়েকটা দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বাদুয়ার চর এলাকার বাসিন্দা গোলজার হোসেন বলেন, ছোট ছোট কালভার্ট বা সেতুগুলোতে কর্তৃপক্ষের তেমন তদারকি চোখে পড়ে না। এজন্যই এগুলোতে বাঁশ কাঠ লাগিয়ে দায় শেষ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল এলাকার ট্রেন যাত্রী জহিরুল ইসলাম বলেন, স্লিপারগুলো আটকানোর জন্য আগে অনেক যন্ত্রপাতি ছিল। এখন বেশিরভাগই নেই। কোথাও বাঁশের খুটি দেওয়া হয়েছে। কোথাও কাঁঠের ত্ক্তার সঙ্গে তারকাটা মেরে আটকানো হয়েছে। এগুলি আসলেই অনেক বিপদজনক।
একই এলাকার আব্দুল হালিম বলেন, ঘোড়াশাল ব্রিজের উপরে নাট নাই, বাঁশ লাগানো আছে। এই অবস্থায় ট্রেন আসা যাওয়া করা বিপদজনক। এই বিপদজনক অবস্থার মধ্যে আমরা কীভাবে চলাফেরা করবো?
যোগাযোগ করা হলে রেলওয়ে নরসিংদীর ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) সাইফুল ইসলাম বলেন, রেল সেতুতে কাঠ-বাঁশের ব্যবহারটা মূল টেকনিক্যাল সাপোর্ট নয়, এসব তুলে দেওয়া হবে। এ কারণে পূর্বাঞ্চলীয় এই রেলপথে ঝুঁকির কোন আশঙ্কা নেই। ট্রেন চলাচলের উপযোগী রাখতে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। দুই একটা ব্রিজে কিছুটা সমস্যা আছে সেটার জন্য প্রাক্কলন পাঠানো হইছে। ট্রেন চলাচল উপযোগী রাখার জন্য যেটা দরকার সেটা আছে। এ মুহূর্তে নরসিংদী-আশুগঞ্জ সেকশনে কোন ধরনের সমস্যা নেই।