নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর মাধবদীতে চুরির ঘটনাকে কেন্দ্রকরে বাড়িঘরে হামলা,ভাঙচুর,নগদ টাকা, স্বর্ণঅলংকার লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজন ছয় মাসে গর্ভবতী গৃহবধু সহ ৮জন আহত হয়েছে বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা। শুক্রবার (৯ অক্টোবর) রাত ১০টায় দিকে সদর উপজেলার মাধবদীতে কাঠাঁলিয়া ইউনিয়নের রহমদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থলে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির লোকজন জানান, ওই এলাকার ভাড়াটিয়া আলাউদ্দিনের ছেলে টেক্সটাইল মিলের শ্রমিক মামুন মিয়ার ঘরে চুরি হয়।
এ চুরির ঘটনার পর বাড়ির পাশে নুরুজ্জামানের বাগিনা সাইদুল (১৬),পাশ্ববর্তী এলাকার মোমেন এর ছেলে সিয়াম (২০),কাশেম এর ছেলে ইয়াছিন (২২) কে সন্দেহ করে ওই এলাকার লোকজন। পরে সাইদুলের মিলের মালিক তাঁরা মো: মিয়া তাদের চোর সন্দেহ জিজ্ঞাসা করার সময় সাইদুলকে একটি থাপ্পর মারে। তার সাথে থাকা সিয়াম উত্তেজিত হয়ে বাড়ি চলে যায়। পরবর্তীতে তারা মিয়ার ভাই চান মিয়া চুরির ঘটনাটি সিয়াম,ইয়াছিন এর স্বজনদের জানান।
পরে সিয়ামের ভাই সাইফুল (২৬) হৃদয়(২২) ও তাদের বাবা মোমেন (৫৮), মুগল (৬০) এর তিন ছেলে মোখলেস (৩৫),আসিক(২৮),রাব্বি(২৪) সহ দশ বারোজন লোক তাঁরা মিয়ার বাড়িতে আসে। এক পর্যায় কথা কাটাকাটি হয় উভয় পক্ষের। এরপর মোমেন লোকজন উত্তেজিত হয়ে মারামারি শুরু করে। উভয় পক্ষের দুইজন আহত হয়। এখবর শুনে ইউপি মহিলা সদস্য বিনা আক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে চাঁন মিয়া সহ দুইজনকে গুরুত্বর আহত দেখে চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতালে পাঠান।
এরপর সিয়ামের মামা দুলাল (৩৬),পিতা আসানউল্লাহ ও মানাউল্লাহ সহ তার দুই ছেলে জাইদুল (৪০), মোস্তাফা(৩০) সহ আরও ৩০/৩৫ জন লোক লাঠি, রড, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুল হাফেজে দোকানে ও তার ছেলে তাঁরা মিয়া,চাঁন মিয়া,শরিফ মিয়া ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় দোকানে থাকা নগদ ৩০ হাজার টাকা, মালামাল লুট করা হয়। একই সময় তাঁরা মিয়ার ঘর থেকে নগদ আট লাখ টাকা ও সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণ লুট করা হয়। এঘটনায় প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা মিয়া। এ হামলায় গুরুত্বর আহত হয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে তাঁরা মিয়ার ভাতিজা
মিনহাজুল (১৬), পিতা রব মিয়া। এছাড়ার তাঁরা মিয়ার ৬ মাসের গর্ভবতী স্ত্রী রাহিমা, বাগনি শায়েরা খাতুন,বগ্নিপতি মান্নান ও মানিক,বড় ভাই চান মিয়া ও তার স্ত্রী রাশিদা,কন্যা চাদনী আক্তার (১৩) মারপিটের স্বীকার হয়েছেন।
মহিলা ইউপি সদস্য বিনা আক্তার সাংবাদিকদের জানান,তাঁরা মিয়ার বাড়ির মারামারি ঘটনা চেয়ারম্যান আমাকে অবগত করেন। পরে ওই রাতে তাঁরা মিয়া ও চাঁন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে আহত অবস্থায় দুইজনকে হাসপাতালে পাঠাই এবং সুষ্ট মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে চলে আসি। এর কিছুক্ষণ পর ঘটস্থলে পুলিশ আসলে তাদের সাথে পুনরায় তাঁরা মিয়ার বাড়িতে যাই,দুই পক্ষের বিষয় চেয়ারম্যানকে অবগত করি। কাঠাঁলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ মোল্লা জানান,একটি চুরিকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা। দুই পক্ষের দুইজন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। মাধবদী থানা পুলিশ বিষটি অবগত আসেন। শনিবার সকালে তাঁরা মিয়া ও চাঁন মিয়ার বাড়ি পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা স্থানীয় ভাবে মীমাংসা করা জন্য সোমবার বসবো।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বিষয়টি অবগত আছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।