নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদী পৌরসভার উন্নয়ন কাজে স্থানীয় সাংসদ মো. নজরুল ইসলামের আপন ভাগিনা কাজী সোহেল বাঁধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি উন্নয়নকাজে কর্মরত শ্রমিকদের মারধোরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের বৌয়াকুড় গোলাপচত্ত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ মিনিসিউপল ডেভেলটমেন্ট ফান্ডের (বিএমডিএফ) আওতায় নরসিংদী পৌরসভা মোড় হতে জবা জুটমিল পর্যন্ত ফুটপাত, ডিভাইডার ও স্ট্রীট লাইটসহ রাস্তা নির্মানকরণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে সড়কের দুইপাশের টাইলস করা ফুটপাত, পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজসহ প্রায় নির্মাণকাজের ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বর্তমানে সড়কে ইট বসানোর কাজ চলছে। কাজটি শুরুর দিকে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী সড়ক উন্নয়ন কাজে বাঁধা দিলেও পরবর্তীতে মেয়র মো. কামরুজ্জামান কামরুল স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করেন। ওইসময় স্থানীয় সাংসদ মো. নজরুল ইসলাম হীরুর প্রভাব খাঁটিয়ে তাঁর আপন ভাগিনা কাজী সোহেল বৌয়াকুড় গোলাপ চত্ত্বর এলাকায় তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ফুটপাত নির্মানে বাঁধা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তাঁর প্রতিষ্ঠানের সামনে ফুটপাত নির্মাণ ছাড়াই ফুটপাত নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করা হয়। বর্তমানে সড়কের ইট বসানোর কাজ চলছে। মঙ্গলবার দুপুরে নির্মাণ শ্রমিকরা গোলাপ চত্ত্বর এলাকায় ইট বসানোর কাজ করতে করতে কাজী সোহেলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে গেলে সে বাঁধা দিয়ে কয়েকজন শ্রমিককে মারধোর করেন বলে অভিযোগ উঠে। এতে আনোয়ার হোসেন, মঞ্জুর মিয়া ও ইব্রাহিম নামের তিনজন শ্রমিক আহত হন।
এব্যাপারে নির্মাণ শ্রমিক আনোয়ার হোসেন, মঞ্জুর মিয়া ও ইব্রাহিম সাংবাদিকদের বলেন, ওনার (কাজী সোহেল) দোকানের সামনে ইট বসানোর জন্য সড়কে সামান্য গর্ত করতে গেলে তিনি প্রথমে বাঁধা দেন। তখন আমরা বলেছি আমাদেরকে বাঁধা দিয়ে কি লাভ জনগনের জন্য রাস্তা হচ্ছে। আপনি ঠিকাদার ও মেয়র সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদেরকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে ইটের উপর ফেলে দেয়। এতে আমাদের শরীরে নীলাফুলা জখম হয়েছে। বিষয়টি আমরা মেয়র সাহেবকে অবগত করেছি।
এব্যাপারে কাজী সোহেল অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি কাউকে মারধোর করিনি। আমিও উন্নয়নের পক্ষে। কিন্তু আমার কাছে জিজ্ঞেস না করেই তারা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ভাঙচুর শুরু করেছে। সেটাই আমি নিষেধ করেছি।
নির্মানকাজের সুপারভাইজার খন্দকার এরশাদুল হক বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও গালিগালাজের শব্দ শুনে আমি এগিয়ে যাই। তখন তিনি কাজে বাঁধা দিয়ে স্থানীয় এমপির ভাগিনা বলে প্রভাব দেখিয়ে আমাদের কয়েকজন শ্রমিককে ধাক্কা মেরে ইটের উপর ফেলে মারধোর করেন।
এব্যাপারে মেয়র মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, সড়ক উন্নয়ন কাজে বাঁধা দিয়ে এমপি সাহেবের ভাগিনা কাজী সোহেল কয়েকজন শ্রমিককে মারধোর করেছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি প্রয়োজনে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।