টেকনাফ উপজেলা ও পৌরসভার সর্বত্র শ্রমবাজার এখন মিয়ানমারে থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দখলে। স্থানীয় দরিদ্র ও শ্রমজীবী লোকজন জানায়, ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী আগমনের পর পরই আমাদের সকল শ্রমের কাজ শরণার্থীরা দখলে নিয়েছে। আমরা কোথাও শ্রমের কাজ না পেয়ে অর্ধহারে, অনাহারে দিনযাপন করছি। আমাদেরকে দেখার কেউ নেই। অতীতে সরকার ১০টাকা দামের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল বিক্রি, কাবিকা, ভিজিএফ, ভিজিডি চাল বিতরণ করলেও ইদানিং তা বন্ধ হয়ে পড়েছে। এমন কি চালের দাম বৃদ্ধি হওয়ার পরও ডিলারের মাধ্যমে খোলা বাজারে চাল বিক্রির কোন ইঙ্গিত নেই।
টেকনাফ উপজেলা ও পৌরসভা ঘুরে দেখা যায়, খাবার হোটেল, আবাসিক হোটেল,গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজে, জেলেদের ফিশিং বোটে, বন্দরের শ্রমিক কাজে বিভিন্ন প্রকার যানবাহনে ও ব্যবসা বানিজ্যে শতকরা ৭০ভাগ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ শ্রমকাজ দখল করে নিয়েছে। প্রতিদিন দলে দলে টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা টেকনাফ উপজেলা ও পৌরসভায় বিভিন্ন স্থানে এসে কম দামে শ্রমের কাজ করছে। এমনও দেখা গেছে যে, অফিস আদালত এবং কর্মকর্তাদের বাসায় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বিভিন্ন শ্রমের কাজ করছে।
এলাকার লোকজন জানায়, স্থানীয় দরিদ্র ও শ্রমজীবী লোকজনদেরকে বাদ দিয়ে শরণার্থীদের মাধ্যমে কাজ করাচ্ছে।
কারণ হিসেবে স্থানীয়রা জানায়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে দিয়ে শ্রমের কাজ করানো আলাদা উপকার রয়েছে। কারণ স্থানীয় লোকজনদেরকে কম মূল্যে কাজ করানো যায়না। রোহিঙ্গারা সারাক্ষণ কাজ করে কম মূল্য দিয়ে। সে ক্ষেত্রে স্থানীয়রা ঘন্টা অনুযায়ী কাজ করে টাকা চাই বেশি। এছাড়া স্থানীয়দের যখন তখন কাজের জন্য পাওয়া যায় না। শরণার্থীদেরকে যখন তখন পাওয়া যায়। এবং কম মূল্যে কাজ করানো যায়। এছাড়া রোহিঙ্গাদেরকে কাজের অলসতা ও কোন বিষয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাদেরকে শ্রমের টাকা না দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু স্থানীয়দেরকে তাড়ানো সম্ভব হয় না।
স্থানীয় সচেতন মহল সূত্র জানায়, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন স্থানে ওপেন ভাবে চলাফেরা, খাবার দাবার স্থানীয়দের সাথে খেলা-ধুলায় যুক্ত হয়ে এলাকায় পরিচিত লাভ করে। এরপর তারা ক্যাম্প থেকে এসে স্থানীয়দের বিভিন্ন ভাড়া বাসায় বাসা ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকালাপে লিপ্ত হয়ে পড়েন।
হোটেল-মোটেলে পতিতা ভিত্তি, ইয়াবা ব্যবসা ও পাচার কাজে, ছুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, খুন, ধর্ষণ ও হত্যাসহ ইত্যাদি কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ফলে এলাকার আইন শৃঙ্খলা অবনতি ঘটে।
এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই টেকনাফ উপজেলা ও পৌরসভা সকল শ্রমকাজ রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যাবে বলে সচেতন মহলের অভিমত।