করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জাতীয় পর্যায়ে চলছে গণটিকাদান। এই কর্মসূচি উদ্বোধনের পর প্রায় চার সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা টিকা দেয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলছেন, টিকা কার্যকর কিনা যাচাই করতে একটা প্রোটোকল তৈরি হয়েছে। তবে এটা ইমপ্লিমেন্টেশন এখনো শুরু হয়নি।
টিকা কার্যকর কিনা সেটা গবেষণার অংশ হিসেবে অবশ্যই যাচাই করা দরকার বলে মনে করেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি সারাক্ষণকে বলেন, ‘জানা প্রয়োজন টিকা দেয়ার পর কখন শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। অন্য দেশের সঙ্গে মিল রেখে আমাদের দেশের গবেষকেরা নিশ্চয়ই সেটা করবে। এটা করতেই হবে। তথ্য সংগ্রহ করে পুরো প্রক্রিয়াটা শেষ করতে প্রায় বছর খানেক লাগবে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে অন্যান্য টিকা নিয়েও গবেষনা হচ্ছে, কোন টিকা কত তাড়াতাড়ি অ্যান্টিবডি তৈরি করে।’
করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম সারাক্ষণকে বলেন, ‘টিকার কার্যকরিতা যাচাই করতে অবশ্যই গবেষণার দরকার আছে, কিন্তু সেটা হচ্ছে না। টিকা গ্রহীতা কিছু মানুষের স্যাম্পল সংগ্রহ করে এই গবেষণা কার্যক্রমটি করতে হবে। পরীক্ষা করতে হবে টিকা গ্রহীতার শরীরে টিকার কার্যকরিতা কতটা হচ্ছে, শরীরে কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে।’
টিকা কার্যকর কিনা যাচাই করতে প্রোটোকল তৈরি হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা সারাক্ষণকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদানের কার্যক্রমের প্রায় চার সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। টিকা কার্যকর কিনা যাচাই করতে একটা প্রোটোকল তৈরি হয়েছে। তবে এটা ইমপ্লিমেন্টেশন (বাস্তবায়ন) এখনো শুরু হয়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ জানুয়ারি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপর টিকার নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব সাইট (www.surokkha.gov.bd) উন্মুক্ত করা হয়। এ সময় ২৬ জন বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধি করোনা টিকা গ্রহণ করেন। এর পরের দিন ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালে আরো ৫৪১ জনকে দেওয়া হয় টিকা। পরে ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পর্যায়ে শুরু হয় টিকাদান কর্মসূচি। সর্বশেষ বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ২৬ লাখ ৭৩ হাজার ৩৮ জন। এদের মধ্যে ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ১৩২ জন পুরুষ টিকা নিয়েছেন আর নারী টিকা নিয়েছেন নয় লাখ ২৬ হাজার ৯০৬ জন।