নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে উন্নয়নের বিজয় মেলা নামে একটি মেলায় অভিযান চালিয়ে সেখানে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া খেলা বন্ধ করে সাতজনকে আটক করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ৩ জনকে দণ্ড দিয়ে বাকিদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়, পাশাপাশি মেলা বন্ধ করা হয়।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আড়াইহাজারের কৃষ্ণপুরা বৌ বাজার এলাকার মেলাটিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশতিয়াক আহমেদের নেতৃত্বে চলে এ অভিযান। অভিযানে অংশ নেন আড়াইহাজার থানার ওসি আহসান উল্লাহসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।
জানা যায়, ২২ জানুয়ারি থেকে আড়াইহাজার পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর উন্নয়নের বিজয় মেলা করার জন্য তার নেতৃত্বে ৮১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করেন। তিনি মেলাটি চালু করেন। মেলার শুরু থেকে সেখানে জুয়া খেলা ও অশ্লীল নৃত্য আয়োজন করে মেলা চালান আয়োজকরা। স্থানীয়রা বার বার প্রতিবাদ করলেও অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া খেলা বন্ধ হয়নি। এতে করে এলাকার যুব সমাজ ও বিভিন্ন বয়সী মানুষ মেলায় গিয়ে বিপথে যাবার মত অবস্থা তৈরি হলে স্থানীয়রা প্রশাসনকে অবহিত করেন।
এদিকে প্রশাসন অবহিত হবার পর ইউএনও ইশতিয়াকের নেতৃত্বে রাতেই অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমান আদালত। সেখানে সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ৪ নৃত্যকারী ও ৩ জন জুয়াড়িকে আটক করে আনা হয়। পরে ৪ নৃত্যকারীকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং বাকিদের দণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, মেলায় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়ার আসর বসানো হয়। এ ছাড়া সন্ধ্যা নামলেই অশ্লীল নৃত্য শুরু হয় সাথে উচ্চ শব্দে বাজানো হয় গান। এই অশ্লীল নৃত্য ও গান চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।অশ্লীল নৃত্যের কারণে একদল উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীরা সন্ধ্যা নামলেই মেলামুখী হতে শুরু করে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গাইবান্ধার পলাশবাড়ির মোখলেস শেখের ছেলে মজনু শেখ (৩২), মাদারীপুরের সদরের নূর আহমেদ হাওলাদারের ছেলে বাদশা হাওলাদার (৫০) ও কিশোরগঞ্জের নিকলীর তারু মিয়ার ছেলে সালাহউদ্দিন (৩০)। এর মধ্যে সালাহউদ্দিনকে ২ দিনের ও বাকিদের ৩ দিনের দণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ইউএনও ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে মেলা থেকে ৭ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ৩ জনকে জেল ও বাকিদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মেলাও বন্ধ করা হয়েছে।
কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বলেন, আমি মেলা করেছি তা সত্য। তবে মেলায় যে এমন ঘটনা বা এ ধরনের কর্মকাণ্ড হতো তা আমার জানা ছিল না। মেলার অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া খেলার বিষয়টি জানতাম না আমি।