নিউজ ডেস্ক,নরসিংদী প্রতিদিন,মঙ্গলবার, ০৩ এপ্রিল ২০১৮:
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরাঞ্চল এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরধরে নির্মমভাবে আবুল কাশেম (৩০) নামে এক যুবককে দিনভর বেধরক পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
সোমবার (২ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার চর সিরতা ইউনিয়নের জয়বাংলা বাজারে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মমসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। উপজেলার কাশেম চর ভবানীপুর এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। এঘটনার সাথে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী পুলিশ।
নিহতের ভাগিনা আরিফ রব্বানি বলেন, ‘দুই দিন আগে চর সিরতা ইউনিয়নের চর ভবানিপুরের কড়ইতলা এলাকায় ভাড়ায় চালিত দুই মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষের একটি ঘটনা ঘটে। এসময় অপর মটরসাইকেল আরোহী আলমগীর ও টিটু নামে দুই যুবলীগকর্মী ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেল ড্রাইভারকে মারতে যায়। তখন এতে কাশেম বাধা দিতে গেলে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। ওইসময় তারা উল্টো কাশেমকেও মারপিট করতে চায়। পরে স্থানীয় লোকজন মিমাংসা করে উভয় পক্ষকে বুজিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।’
তিনি আরও জানান, ‘এরই জেরধরে সোমবার (২ এপ্রিল) দুপুরে বিশেষ কাজে কাশেম ঢাকা যাওয়ার পথে তার পথরোধ করে আলমগীর, টিটু, জনি, জামাল ও সিদ্দিকসহ আরও অজ্ঞাত কয়েকজন যুবলীগের নেতাকর্মীরা। পরে কাশেমকে তারা ধরে নিয়ে যায় জয়বাংলা বাজারে। সেখানে নেয়ার পর দুই লক্ষ টাকা দাবি করেন নেতাকর্মীরা। এসময় টাকা না পেয়ে দিনভর নির্মম ভাবে বেধরক পিটিয়ে পা ভেঙে দেয় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এসময় সাধারন মানুষ বাধা দিতে গেলে তাদেরকেও হত্যার ভয় দেখিয়েছে নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে কাশেমের অবস্থা গুরতর দেখা দিলে নেতাকর্মীরা তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। তখন স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মমেক হাসপাতালের ৯ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করলে চিকিৎসকরা কাশেমকে মৃত ঘোষণা করেন।’
কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মমসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। রাতেই এঘটনার সাথে জড়িত দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অন্যান্য আসামিদের নামও পাওয়া গেছে। তাদেরকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপরাধীরা যে দলেরই হোক কেন, তারা কেউ আইনের কাছে ছাড় পাবে না। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।