অনলাইন ডেস্ক | নরসিংদী প্রতিদিন-
শুক্রবার,১৮ জানুয়ারি ২০১৯:
বিবাহ নামক সামাজিক আচারে আজও কুমারিত্বকে বড় চোখে দেখা হয়। অথচ কেউ বলে না, ছেলেটি তার কুমারত্ব হারিয়েছে কি না। এমনকী, অনেক পাত্রপক্ষ তো বিয়ের সমন্ধ করতে গিয়ে পরিষ্কার বলে দেন, তাঁদের কুমারি মেয়ে চাই।
‘কুমারিত্ব’ হারানোর মাপকাঠি ঠিক কী? কী করে বোঝা যাবে মেয়েটি তাঁর কুমারিত্ব হারিয়েছে কিনা? ভাবতে অবাক লাগলেও সত্যি আজও আমাদের দেশে ৯৯ শতাংশ মেয়েকে এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সবচেয়ে বিস্ময়ের কথা মেয়ের কুমারিত্ব আছে না গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই প্রশ্ন করে বসেন খোদ বাড়ির লোকেরাই। কারণ, বাড়ির লোকও বিশ্বাস করেন কুমারিত্ব হারানোর উপরে মেয়ের চরিত্রের সংজ্ঞা নির্ভর করছে। বিয়ের আগেই মেয়ের কুমারিত্ব নষ্ট হয়েছে, এই খবর রাষ্ট্র হলে আর দেখতে হবে না। চারিদিকে ফিসফাস, বাঁকা চোখের চাহনি, আড়ালে হাসি- এটাই তো সমাজের স্বাভাবিক ছবি। অথচ, বাড়ির ছেলেটাকে কেউ ঘুণাক্ষরেও এই ধরনের প্রশ্ন করে না।
বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলা এক পাত্রকে এই কুমারিত্ব নিয়ে ভয়ানক এক প্রশ্ন করে বসেছিলেন পাত্রী। হবু বরকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘তিনি কুমারিত্ব হারানো কোনও মেয়েকে বিয়ে করতে প্রস্তুত কি না?’ প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে কিছুক্ষণ বহু স্ত্রী-র দিকে তাকিয়ে ছিলেন হবু বর। তারপর যা বললেন, তা হুবহু লিখলে এরকমটাই দাঁড়ায়- ‘চারিত্রিকভাবে একটা মানুষ কেমন, সেটাই আমার কাছে প্রধান বিষয়। কুমারিত্ব আছে না গেছে এই দিয়ে কারও চরিত্র মাপা যায় না বলেই মনে করি। এইরকমটাও হতে পারে যে, সেই মহিলা ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। আবার এমনও হতে পারে, সেই মহিলা কারোকে প্রাণাধিক ভালবাসতেন। কিন্তু, ভালবাসার সেই মানুষটা তাঁর প্রেমিকার দুর্বলতাকে ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। মেয়েটি তাঁর ভালবাসার মানুষটিকে সুন্দর করে পেতে চেয়েছিল তাই নিজের সমস্তকিছু সঁপে দিয়েছিল, কিন্তু কোনও কারণে দু’জনের সম্পর্ক টেকেনি। আমি কোনও দুর্বল চিত্তের মেয়ের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চাই না। আমি এমন একজনকে বিয়ে করতে চাই যে, ভালমনের এবং ভাল চরিত্রের মানুষ হবে। বিয়ের আগে সে কারোর শয্যাসঙ্গিনী হয়েছিল কি না, সেটা আমার কাছে বিচার্য নয়। হ্যাঁ, বিয়ের আগে আমার হবু স্ত্রী যাই করুক তার পিছনে যেন সত্যতা থাকে। আমি মনে করি, হবু স্ত্রীর আগে যৌন সংসর্গ হয়েছে কি না সেটা না ভেবে তাঁকে সুন্দর একটা জীবন দেওয়াটাই আমার কর্তব্য, যাতে সে তাঁর অতীতের কষ্ট-বেদনাকে ভুলে যেতে পারে।’
হবু স্ত্রীর সঙ্গে হবু বরের এই কথোপকথন এখন ভাইরাল হয়ে উঠেছে নেট দুনিয়ায়। স্বাভাবিকভাবেই বরের জবাবে কুপোকাত মহিলারা। এই জবাবটি যদি সব পুরুষরা দিতে পারতেন! এখন নাকি এমনটাই ভাবছেন অধিকাংশ মহিলা।
খবর: এবেলা.ইন