তারেক পাঠান | নরসিংদী প্রতিদিন-
সোমবার,২৫ মার্চ ২০১৯:
নরসিংদীর পলাশে জিনারদী ইউনিয়নে যমুনা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নামে ভুয়া সংস্থা প্রতারণার ফাঁদ পেতে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের নাম করে পারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমন ভুয়া সংস্থার পরিচয়,নাম ঠিকানা যাচাই বাচাই না করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কোনো অনুমতি না নিয়েই প্রশিক্ষণের জন্য স্থান দিলেন পারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ স্কুল কর্তৃপক্ষ। এমন প্রতারণার শিকার হয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন ভুক্তভোগী পরিবার ।
জানা যায়, যমুনা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নামে তিন মাস দর্জি,ব্লক বাটিক ও মাশরুম প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা থাকলেও মাত্র দু’দিন প্রশিক্ষণ দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় সংস্থাটি।
এছাড়া সনদপত্র, সেলাই মেশিন,কেচি,ফিতা,কেটালক বই দেয়াসহ যে সকল প্রতিশ্রুতি দিয়ে অত্র স্কুলে অধ্যয়নরত অষ্টম,নবব,ও দশম শ্রেণীর একাংশ ছাত্রীদের প্রশিক্ষণে ভর্তি করা হয়েছে তার কোন কর্মকান্ড বাস্তবে রুপ দেয়নি সংস্থাটি। প্রশিক্ষনে ভর্তি হওয়া পারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী পপি, সাথী, মিতু, উল্মে সালমা,সুমাইয়া,মিম,মনি,রুমা ও অত্র স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী আজিনুন নাহার,বন্ধনা রাণী,সপ্না,শারমিন সুলতানাসহ একাধিক ছাত্রীরা জানান, আমাদের স্কুল চলাকালিন সময়ে যমুনা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নাম করে দুইজন ব্যক্তি আমাদের ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে রিফল্টে দিয়ে বলেন আমাদের স্কুলে দর্জি, ব্লক বাটিক ও মাশরুম প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এই প্রশিক্ষণে প্রথম ভর্তি হওয়া বিশজন প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন,কেচি,ফিতা,কেটালক বই দেয়াসহ আর ও অনেক কিছু দেওয়া হবে। তিন মাসের কোর্সে ভর্তি আবেদন ফরম বাবদ প্রথমে আমাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০ টাকা ও ভর্তি ফি বাবদ আর ও তিনশত টাকা করে নেন। সংস্থাটি আসন সংখ্যা সীমিত (ত্রিশ) বলে ভর্তি করালে ও বাস্তবে সত্তুর থেকে আশি জনের কাছ থেকে নিয়েছেন হাজার-হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ।
প্রশিক্ষনে ভর্তি হওয়া প্রশিক্ষনার্থীরা আর ও জানান,সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দু’দিন ক্লাস করার কথা। এভাবে তিন মাসের জন্য তারা ভর্তি হয়েছেন। সংস্থাটি গত ৬ ও ৭ মার্চ দু’দিন প্রদশর্নী মূলক ক্লাস করান। প্রদশর্নী মূলক ক্লাসে প্রক্ষিণে ভর্তি হওয়া ছাত্রীদের কেচির বদলে ব্লেট দিয়ে কাপড় কেটে দেখিয়েছেন। তারপর থেকে তাদের আর কোন সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি। এমনকি সংস্থটির লিফলেটে তাদের ব্যবহৃত ০১৭৭৬৭৪৫৭৪৯, নম্বরে একাধিকবার কল দিলে ও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে পারুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, যমুনা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নামের সংস্থাটি ভুয়া কিনা আমি জানি না। তবে আপনি যেহেতু বলছেন বিষয়টি যাচাই করে দেখব। অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ওবায়দুল কবির মৃধা বলেন,টাকা পওয়সা নেওয়ার বিষয়ে আমরা কোনো কিছু জানি না। আমরা গ্রামের মানুষের উপকারে জন্য সরল মনে তাদেরকে স্থান দিয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম ফজলুল হক জানান,পারুলিয়া স্কুলে কোনো ট্রেনিং নেওয়ার বিষয়ে আমি জানি না। আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমোতি দেওয়া হয়নি।
তাই প্রশিক্ষণার্থী,অভিভাবক ও সমাজের সচেতন মহল মনে করেন,আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন প্রশিক্ষণের নামে কোনো প্রতারণা করতে না পারে তাই অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সি.সি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের ছবি দিয়ে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইন-আনুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছেন ।