নিজস্ব প্রতিবেদক | নরসিংদী প্রতিদিন –
শনিবার,১১ই জানুয়ারী ২০২০:
২০১৯ সালে ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৭ হাজার ৮৫৫ জন। ওই দুর্ঘটনাগুলোতে আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩০ জন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
শনিবার, ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনার সংবাদ পর্যব্ক্ষেণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানান মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ এ দুর্ঘটনার পরিমাণ ২০১৮ এর সমপরিমাণ হলেও প্রাণহানী ৮.০৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া রেলপথে ৪৮২ টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত এবং ৭০৬ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ২০৩ টি দুর্ঘটনায় ২১৯ জন নিহত, ২৮২ জন আহত এবং ৩৭৫ জন নিখোঁজ হয়। সড়ক, রেল, নৌ-পথে সর্বমোট ৬২০১ টি দুর্ঘটনায় ৮৫৪৩ জন নিহত এবং ১৪৩১৮ জন আহত হয়েছে।
দূর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ী চালানো, বিপদজনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ক্রটি, ফিটনেস বিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহন বৃদ্ধি হওয়া ইত্যাদি।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশ গুলো হলো— ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কঠোর ভাবে বাস্তবায়ন করা, টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ করা, ফুটপাত বেদখল ও মুক্ত করা, দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন ও জেব্রাক্রসিং অংকন করা, গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, যাত্রী,পথচারী ও গণপরিবহনবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধিমালা প্রণয়ন, গাড়ীর ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে আধুনিকায়ন করা, সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠনপূর্বক হতাহতদের চিকিৎসা ও পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করা, দেশব্যাপী চাহিদানুযায়ী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন গণপরিবহন নামানোর উদ্যোগ নেয়া, ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমী গড়ে তোলা, গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য দেশের সকল মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতিমাসে একদিন গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা এবং সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।