মোঃ আব্দুল কাদির | রায়পুরা প্রতিনিধি
-সোমবার-০৩ আগষ্ট ২০২০: নরসিংদীর রায়পুরার পীরপুরে ঈদ-উল-আযহার দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিলপ্ত প্রায় দাড়িয়াবান্ধা খেলা। পীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত খেলায় দুটি দল অংশগ্রহণ করেন। দল দুটি হলো, কমলা জার্সি পরিহিত ‘বিবাহিত দল’ বনাম হলুদ জার্সি পরিহিত ‘অবিবাহিত দল’। খেলায় অবিবাহিত দল জয় লাভ করেন। ওই সময় করোনাকে উপেক্ষা করে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের নানান বয়সী সহস্র নর-নারী খেলা উপভোগ করতে আসেন।
খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার্স আপ দলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন নরসিংদী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জামাল আহমেদ চৌধুরী,মির্জাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ফাইজুর রহমান।
সাবেক চেয়ারম্যান ফাইজুর রহমান জানায়, গ্রাম-বাংলার যে কয়েকটি প্রাচীন খেলা আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো দাড়িয়াবান্ধা। খেলাটি এখন বিলুপ্তির পথে। পীরপুর গ্রামের মানুষ এখনো এই খেলাকে প্রাচীন ঐতিহ্য হিসাবে ধরে রেখেছেন। তিনি আরো জানান, পঁচিশ বছর ধরে নিয়মিত দুটি ঈদের দ্বিতীয় দিন দাড়িয়াবান্দা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দর্শকরা খেলাটি দেখে বেশ আনন্দ পাই।
খেলায় রেফারীর দায়িত্বে থাকা রায়পুরা পৌরসভার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহ জানায়, পীরপুর গ্রামে আগে অনেক নামকরা দাড়িয়াবান্ধা খেলোয়াড় ছিল। তাঁরা আশেপাশের চার-পাঁচটি জেলায় গিয়ে খেলতেন। গ্রামীণ খেলাটি দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। তারপরও এই প্রজন্মের ছেলেরা দাড়িয়াবান্ধাকে টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
খেলা উপভোগ করতে আসা নানান বয়সী এমন দশজন দর্শক জানায়, প্রতি বছর দুটি ঈদ উৎসবের দ্বিতীয় দিনটির অপেক্ষায় থাকেন তাঁরা। কখন দাড়িয়াবান্ধা খেলা অনুষ্টিত হবে। প্রবীণদের কেউ কেউ খেলা দেখতে এসে সেই কিশোর বয়সে কিছুটা সময়ে জন্য হারিয়ে যান বলে জানান। এই প্রজন্মের যুবকদের কাছেও খেলাটি বেশ উপভোগ্য বলে জানান তাঁরা।
বিবাহিত দলের দলপতি আল আমিন জানায়, ক্রিকেট ও ফুটবল খেলায় সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পৃষ্টপোষকতা করে থাকেন। কিন্তু দাড়িয়াবান্ধার মতো গ্রামীণ খেলাধুলায় কেউ সহজে এগিয়ে আসেন না। তাই দিনে-দিনে দাড়িয়াবন্ধা হারিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরাকির সহযোগিতা পেলে দাড়িয়াবান্ধা হয়ে উঠতে পারে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম।
ওই সময় খেলোয়াড়রা গ্রামীণ এই খেলাটিকে টিকে রাখতে সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা কামনা করেন। দাড়িয়াবান্ধা খেলায় ধারাবিবরণীতে ছিলেন,মোশারফ হোসেন।