সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় একই পরিবারের দুই সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে জনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন নিহত শাহিনুর রহমানের শাশুড়ি ময়না খাতুন। শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকালে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারান চন্দ্র পাল।
তিনি জানান, রাতে মামলাটি রেকর্ড করার পরপরই তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওসি বলেন, ‘এটি যে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড তাতে কোনও সন্দেহ নেই। হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ-সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।’
এর আগে বুধবার (১৪ অক্টোবর) মধ্যরাতের পর কোনও একসময় কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিশা গ্রামে স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
নিহতরা হলেন- খলিশা গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি (৯) ও মেয়ে তাসনিম (৬)। ওই দম্পতির ৫ মাস বয়সী শিশু কন্যা মারিয়াও ওই ঘরে ছিল, ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়।
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে বলে পুলিশ ও নিহতের পরিবারের স্বজনদের ধারণা।
এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফোটার আগমুহূর্তে হঠাৎ শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলাম ঘরের ভেতর গোঙানোর শব্দ পান। পরে তিনি উঠে গিয়ে দেখেন শাহিনুরের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো। ভেতরে রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে।
ঘটনার পরপরই ওসি হারান পাল জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন পুলিশকে খবর দেন। তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পাশের এক বাড়িতে রাতে ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতেরা একই পরিবারের ৪ সদস্যকে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে তিনি নিজেসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং ৪ জনের লাশ দেখতে পান।
ওসি জানান, ৪ জনকেই কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, বাড়ি থেকে কোনও জিনিসপত্র খোয়া যায়নি।
রায়হানুল ইসলাম জানান, তাদের মাও বড় ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে একই বাসায় থাকতেন। তবে বুধবার রাতে তার মা এক আত্মীয়র বাড়িতে গিয়েছিলেন। রায়হানুল বলেন, ‘ভোরে পাশের ঘর থেকে বাচ্চাদের গোঙানির শব্দ শুনতে পাই। দরজা খুলে দেখি, ভেতরে ভাই-ভাবির রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। কিছুক্ষণ পর বাচ্চারাও মারা যায়।’