নরসিংদী প্রতিদিন: নরসিংদীর প্রীতম ভৌমিকের উপর পুলিশী নির্যাতনের প্রমান পাওয়া গেছে। জেলা ও দায়রা জজ’র নির্দেশে নরসিংদীর সিভিল সার্জনের দেয়া মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্টে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন’র কথা উল্লেখ করেছেন। শরীরের ৪টি স্থানে এসব আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আইনজীবীদের মতে এই রিপোর্টের মধ্য দিয়ে প্রমানিত হয়েছে যে, পুলিশ প্রীতমের উপর নির্যাতন চালিয়ে তার কাছ থেকে জোরপূর্বক তার মাকে হত্যা করার স্বীকারোক্তি আদায় করেছে। জেলা জজ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য এবং ৪৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করার জন্য। কিন্তু খবর নিয়ে জানা গেছে পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে নরসিংদী সদর মডেল থানায় এখনো পর্যন্ত এ মর্মে কোন নির্দেশ পাঠানো হয়নি। এদিকে রবিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়ার বিনা মামলা বিনা ওয়ারেন্ট এবং কোনো প্রকার প্রমানাদি ছাড়া প্রীতম সাহাকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে ৪ দিন ডিবি অফিসে আটকে রেখে তার উপর অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন করে মা কে হত্যা করার মিথ্যা জবানবন্দী আদায়ের ঘটনা উল্লেখ করেন পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কিন্তু পুলিশ সুপার এব্যাপারে কোন জবাব না দিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে সব কিছু জানিয়েছেন বলে তার বক্তব্য শেষ করেন। এ তথ্য জানিয়েছেন প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়ার। এর আগ গত শনিবার রাতে ৭১টেলিভিশন থেকে পুলিশ সুপারের সাথে যোগাযোগ করে প্রীতমের উপর শারীরিক নির্যাতন ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার ৭১টেলিভিশনকে কোন বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। এদিকে প্রীতমের পিতা প্রদীপ ভৌমিক ও তার ভগ্নিপতি মামলার বাদী নয়ন সাহা জানিয়েছেন, প্রকৃত হত্যাকারীদেরকে আড়াল করার জন্যই পুলিশ নিরপরাধ প্রীতম ভৌমিককে শারীরিক নির্যাতন করে মায়ের হত্যাকারী হিসেবে জবানবন্দী আদায় করেছে। তারা জানান, মধ্যকান্দাপাড়া বাগবিতান ক্লাব নিকট এলাকাটি অপরাধপ্রবন এলাকা। এখানে প্রায়ই বড় বড় ছিনতাই সংঘটিত হয়। কিন্তু পুলিশ এ পর্যন্ত কোন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। স্কুলে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ী ফিরে এসে মাকে ঘরের ভিতর মৃত দেখার অপরাধে পুলিশ তাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। প্রিতমের বড় বোন প্রিয়াঙ্গা সাহা জানিয়েছেন, তার ভাই প্রীতম ভৌমিক একজন নিরীহ স্কুল ছাত্র। বিনা দোষে তাকে নির্যাতন করে তার মুখ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে পুলিশ। পুলিশ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য তার ভাই প্রীতমকে মামলার আসামী বানিয়েছে। এই ঘটনা ঢাকা তথা বাংলাদেশের বিখ্যাত জজ মিয়া নাটকেরই নয়া সংস্করন ছাড়া আর কিছুই নয়। মামলার বাদী নয়ন সাহা জানিয়েছেন, আমি মামলার বাদী, পুলিশ আমাকে তদন্ত কার্যে কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমার কোন পরামর্শ গ্রহণ করছে না। উপরন্তু আমাকে ক্রয় ফায়ারের ভয় দেখানো হচ্ছে। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে জেরা করা হয়েছে। আমি বার বার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছি। কিন্তু পুলিশ বার বারই আমার শ্যালক প্রীতম ভৌমিককে হয়রানী করেছে এবং শেষ পর্যন্ত তাকে নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নিয়েছে। প্রীতমের পরিবারের লোকজন এব্যাপারে পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, তারা দীপ্তি ভৌমিক হত্যাকান্ডের প্রকৃত আসামীদের বিচার চান। পাশাপাশি নিরপরাধ প্রীতম ভৌমিকের উপর পুলিশী নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করেন।