নরসিংদী প্রতিদিন : নরসিংদীতে পৌর সিএনজি স্ট্যান্ড স্থানান্তরের ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা দিন দিন চরম আকার ধারণ করছে। বীরপুর পাক্কার মাথায় স্থানান্তরের পক্ষের লোকেরা লাঠি সোটা নিয়ে স্থানান্তরিত পাক্কার মাথায় পাহাড়া দিচ্ছে। আর সাধারণ যাত্রীরা স্ট্যান্ডটি বীরপুর খালের পূর্ব সংলগ্ন নতুন স্থানে স্থানান্তরের দাবীতে প্রতিদিন মিটিং, মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করছে। এই উত্তেজনার কারণে গতকাল বুধবার সকাল ১০ টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ ঘন্ট নরসিংদী-রায়পুরা সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। সর্ব শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সিএনজি চালকরা সারা দিন সিএনজি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্থানান্তরের পক্ষের লোকেরা চাচ্ছে স্ট্যান্ডটি বীরপুরের পাক্কার মাথায় স্থানান্তরিত স্থানে কায়েম রাখতে। অপর পক্ষে রায়পুরার হাজার হাজার যাত্রীরা চাচ্ছে বীরপুর খালের পূর্ব সংলগ্ন নতুন স্থানে স্থানান্তর করতে। এ নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার কারণে সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এ পর্যন্ত কমবেশী ১৫/২০ জন যাত্রী লাঞ্ছিত হয়েছে। সর্বশেষ লাঞ্ছনার শিকার হয়েছে চরসুবুদ্ধি এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আবুল ইসলামের কন্যা লাকি আক্তার। পাক্কার মাথায় স্থানান্তরের পক্ষের লোকেরা লাঠি সোঠা নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। রায়পুরা ও নরসিংদী থেকে কোন সিএনজি বা ইজিবাইক যাত্রী নিয়ে সরাসরি নরসিংদী ও রায়পুরার মধ্যে চলাচল করতে পারছে না। সিএনজি ও ইজিবাইকগুলো বীরপুর পাক্কার মাথায় পৌছলেই লাঠি সোটাধারী লোকেরা যাত্রীদেরকে গাড়ী থেকে জোরপূর্বক টেনে হেঁচড়ে নামিয়ে দিচ্ছে। কোন যাত্রী সিএনজি থেকে নামতে না চাইলে তার উপর চালানো হচ্ছে নির্মম নির্যাতন। মেয়েদেরকে শ্লীলতাহানী ঘটিয়ে সিএনজি থেকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে রায়পুরার সাধারণ সচেতন যাত্রীরা। দীর্ঘ দিন যাবত এই উত্তেজনাকর অবস্থা বিরাজিত থাকলেও সংর্শ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ ব্যাপারটি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। পাক্কার মাথায় স্থানান্তরের পক্ষের লোকেরা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সিএনজি স্ট্যান্ডটি পাক্কার মাথায় কায়েম রাখতে যাচ্ছে। অপর পক্ষে ভোগান্তির শিকার সচেতন যাত্রীরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সুবিধাজনক স্থান বীরপুর খালের পূর্ব সংলগ্ন নতুন স্থানে স্থানান্তর করতে চাচ্ছে।
জানা গেছে, রায়পুরা-নরসিংদী সড়কটি চালু হবার পর রেলক্রসিং সংলগ্ন স্থানে প্রতিদিন ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্ট্যান্ডটি রেল ক্রসিং এলাকা থেকে অর্ধ কিলোমিটার পূর্ব দিকে বীরপুর পাক্কার মাথায় স্থানান্তর করে। সেখানে স্ট্যান্ড স্থাপন করে একটি সুবিধাবাদী মহল সিএনজি ও ইজিবাইক থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে চাদা আদায় করছে। এতে নরসিংদী থেকে রায়পুরার যাত্রীরা অর্ধ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে পাক্কার মাথায় যেতে হচ্ছে। পাশাপাশি রায়পুরা থেকে নরসিংদীগামী যাত্রীরা পাক্কার মাথায় নেমে অর্ধ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে নরসিংদী শহরে যেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি বেড়ে গেছে। তাদের সময় অপচয় হচ্ছে। পকেট থেকে অতিরিক্ত টাকাও ব্যয় হচ্ছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখি করেও কোন সুফল পাচ্ছে না। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হবার পরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। এই অবস্থায় রায়পুরার সাধারণ যাত্রী ও প্রাত্যহিক যাত্রী, বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন সময়ই বড় ধরনের সংঘর্ষের আশংকা করছে সাধারণ মানুষ।