লক্ষন বর্মন, নরসিংদী প্রতিদিন: নরসিংদীর মাধবদীর কান্দাইলে যাত্রীবাহী বাস ও কাভার্ডভ্যান খাদে পড়ে ৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে আরো ২০ জন। আজ বুধবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদী ও নারায়নগঞ্জের সির্মান্তবর্ত্তী এলাকা কান্দাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দূঘটনার পরপর ঢাকা সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দুই ঘন্টা পর দূঘটনাকবলিত যানবাহন দুইটি উদ্ধারের পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে দূঘটনার কারন অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একই সাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।
নিহতরা হলেন, মাধবদী থানার আমদিয়া ইউনিয়নের কান্দাপাড়া এলাকার আব্দুর রহমান (৬৫) ও তাঁর ছেলে রবিউল ইসলাম (২০), একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে সুমি বেগম (২০) ও পাশ্ববর্তী চাঁনগাও হাটখোলা গ্রামের আলী আকবরের স্ত্রী হেনা বেগম (৩০), চিত্তরঞ্জন বর্মন (৪৫)। তারা সবাই বাসের যাত্রী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মনোহরদী থেকে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস কান্দাইল বাসষ্ট্যান্ডে যাত্রী নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। ওই সময় পেছন থেকে আসা দ্রুতগামী একটি কাভার্ডভ্যানের সামনের বামদিকের চাকা বিস্ফোরিত হয়ে সামনে দাড়ানো যাত্রীবাহী বাসকে সজোড়ে ধাক্কা দেয়। এতে যাত্রী বাহী বাসটি ছিটকে পাশের একটি খাদে পড়ে পানিতে তলিয়ে যায়। এসময় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে কাভার্ডভ্যানটি গিয়ে যাত্রীবাহী বাসের উপর পড়ে। এতে ঘটনা স্থলেই ৪ জন নিহত হয়। আহত হয় ২০ জন। আহতদের মধ্যে চিত্তরঞ্জন বর্মন ঢাকায় নেওয়ার পর নামে আরো একজন মারা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহতদের উদ্ধার করে মাধবদী, নারায়গঞ্জের গাউসিয়া, রুপগঞ্জ, কাচপুর সহ বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। ঘটনার পর থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানচলা বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন বেলা ১২টার দিকে দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও কাভার্ডভ্যান উদ্ধারের পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দূঘটনায় নিহত রফিকুল ইসলামের মামা মিয়া বলেন, আমার বোন জামাই ও ভাগ্নে ঢাকার একটি হোটেলে বাবুচির কার করতো। সকালে তারা বাড়ী থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য কান্দাইল বাসষ্ট্যান্ডে যায়। গাড়ীতে উঠার সময় পেছন থেকে একটি কভারভ্যান বাসটিকে ধাক্কা দিলে তারা গাড়ীর নিচে চাপা পরে মারা যায়।
উদ্ধার কর্মী বুলবুল হাসান বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ। দৌড়ে গিয়ে দেখি দুইটি বাস সড়কের পাশে একটি খাদে পানির নিচে পড়ে গেছে। পেরে লোকজনদের নিয়ে বাসের ভেতর থেকে লোকজনকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরন করি।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মোঃ ইলিয়াস বলেন, ঘটনাস্থলে ৪ জন মারা যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরো ২ জন মারা যায়। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দূঘটনাকবলিত গাড়ী দুইটিকে উদ্ধার করার পর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। চালকদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড.সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: মোজাম্মেল হককে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ২০হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হয়।