1. khandakarshahin@gmail.com : Breaking News : Breaking News
  2. laxman87barman@gmail.com : laxman barman : laxman barman
  3. shahinit.mail@gmail.com : narsingdi : নরসিংদী প্রতিদিন
  4. msprovat@gmail.com : ms provat : ms provat
  5. hsabbirhossain542@gmail.com : সাব্বির হোসেন : সাব্বির হোসেন
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০

টাকার অভাবে স্বামীর লাশ দেশে আনতে পারছেন না রায়পুরার রহিমা

ডেস্ক রিপোর্ট | নরসিংদী প্রতিদিন
  • প্রকাশের তারিখ | শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭
  • ২৮৬ পাঠক

নরসিংদী প্রতিদিন: টাকার অভাবে স্বামীর লাশ দেশে আনতে পারছেন না রায়পুরার রহিমা আক্তার নামে এক গৃহিনী। সৌদি আরবে মৃত জয়নাল আবদিন নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার শ্রীরামপুর উত্তর পাড়া এরাকার আজগর আলীর ছেলে। দুই ছেলে আর এক মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার জয়নাল মিয়ার। দেশে থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করে যা পায় তা দিয়ে নিজেরদের পেটে ভাত দেয়া-ই যেনো নিত্যদিনের অভাব। তার উপর আবার ঘরের কিছু আসবাবপত্র ও ছোট্ট তিন শিশুর লেখাপড়ার খরচও। এই যখন চিন্তা, সেই মুহুর্তে স্বামী-স্ত্রী মিলে যুক্তি করলো সমিতি থেকে কিছুু ঋণ নিয়ে আর দার দেনা করে বিদেশ যাওয়ার।
সিদ্ধান্ত মোতাবেক পল্লী বিকাশ সমিতি নামে একটি সংস্থা থেকে এক লাখ টাকা, ব্র্যাক থেকে দুই লাখ টাকা এবং আতœীয়-স্বজনের কাছ থেকে আরো পাঁচ লাখ টাকা ধার-দেনা করে আট লাখ টাকা জোগার করেন তারা। এই আট লাখ টাকার বিনিময়ে গোলাপ নামের স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবরে সৌদিআরবে পারি জমান জয়নাল আবেদিন।
আশা ছিলো সৌদি আরবে চাকরী করে অনেক টাকা রোজগার করবে, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করাবে এবং শিক্ষিত করে বড় করবে, আর দেশে এসে একটি দালান ঘরও করবে। সেই আশা বুকে ধারণ করে সৌদিআরবে আল মুন্সি মাদ্রাসার অফিস পরিচ্ছন্নকর্মী হিসাবে কাজ শুরু করেন জয়নাল। তেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা আর ভাষাজ্ঞ্যান না জানার কারনে বেতন ধরা হয়েছে বাংলাদেশী টাকায় মাত্র ১২ হাজার টাকা।
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, জয়নালের সেই আশার মুখে ঘুরেবালি হয়ে মাত্র এক বছর দশ মাসের মাথায় দেখা দেয় অমানিশার ঘোর অন্ধকার। গত ৫সেপ্টেম্বর ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে সৌদি আরবের আল সাফা মক্কা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জয়নাল।
জয়নালের স্ত্রী রহিমা আক্তার বলেন, আমরা এহনো প্রায় তিন লাহের মতো ঋৃণি আছি। এহন বাহি জীবন এই অবুঝ শিশুদের নিয়া কেমনে দিন কাটামো। হেই পথই দেখছিনা। স্বামী ছাড়া সংসারে আয় রোজগার করার মতো আমার আর কেউ রইলোনা। এহন আমাদের পথে বসা ছাড়া কি-ই বা করার আছে? আমার তিনটি সন্তানই খুব ছোট তাদের রাইখ্যা কোনো চাকরী নেব বা কারো বাড়িতে গিয়া কাজ করমু হেইডাও সম্ভব নয়। আর এমনে দিন চললে ছেলে-মেয়েদের মুখে কিই-বা দেমু। এহনইতো সহালে ঘুম থেকে জাইগ্যা অবুঝ শিশুরা আমার কাছে খাওন চায়, আমি চোখের জল ছাড়া তাদের আর কিছুই দিতে পারিনা। আমার চোখের জল আর অবুঝ শিশুদের কান্না দেইখ্যা আশপাশের মাইনষ্যে কিছু খাবার দেয়, পাশাপাশি একটি মাদ্রাসার হুজুরদের খাওন খাইয়া আমরা দিন পার করতাছি।
রহিমা কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, একমাস গত হইয়া গেলো আমার স্বামী মারা গেছেন, দেশে আনার জন্য নাকি তিন লাখ টেহা লাগে। আমি এহনো যাওনের সময়ের ঋণই শোধ করতে পারি নাই। এহন আবার লাশ দেশে আনার জন্য টেহা দেব কেমনে। আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিলো বিদেশ থেকে টাহা আসলে কতকিছু করমু আর হইলো এর বিপরীত। দেশের কত বড় বড় লোক আছে কতজনের জন্য কতকিছু করে, এছাড়া প্রধানমন্ত্রীওতো দেহি কতজনের জন্য কতকিছু করেন। আমার স্বামীডারে কি কেউ দেশে আনার ব্যবস্থা করতে পারেনা। এই কথাগুলো বলে বার বার মুর্ছা যায় জয়নালের স্ত্রী রহিমা।

মৃত জয়নাল আবদিনের শিশুপুত্র অন্তর মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, সে স্থানীয় সেরাজনগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে বাবার শোকে স্কুলে যেতে পারছেনা। সে আরো জানায়, সৌদিআরবে আমার বাবা মারা যায় টাহার অভাবে লাশ আনতে পারছিনা। এহন টাকার লাইগ্যা আর লেহাপড়া অইবোনা। আমার ছোট্ট একটি ভাই ও বইনসহ আমাদের নিয়া যেনো মায় অথৈ সাগরে হাবুডাবু খাচ্ছে। সামনে আরো অনেক কঠিন পথ পাড় করতে অইবো, আমাদের চলার লাইগ্যা কোনো ব্যবস্থা না অইলে এতিমের মতো জীবন যাপন করতে অইবো। আমার বাবার লাশটি অনেক দিন ধইরা বিদেশে পইড়া আছে, কোন খোঁজ-খবর নাই, বাবার লাশটি দেশে আনার জন্য সরকারীভাবে আশ্বাস পাচ্ছিনা। সরকারী ভাবে প্রয়োজনীয় পদপে না নিলে বাবার লাশটি আর দেখতে পারমুনা। তাই বাবার লাশটি দেশে আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

নরসিংদী জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা সরকার বলেন, নরসিংদীর রায়পুরার শ্রীরামপুরের জয়নাল নামে এক ব্যক্তি সৌদি আরবে মারা গেছেন মর্মে আমাদের অফিসে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন তার স্ত্রী রহিমা বেগম। আবেদনে তার স্বামী জয়নাল আবদিনের লাশ সরকারী খরচে দেশে আনার জন্য উল্লেখ করেছেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গত মাসের ২৬ তারিখে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, রায়পুরাতে জয়নাল আবদিন নামে এক ব্যক্তি সৌদি আরবে মারা গেছেন তার স্ত্রী রহিমা আক্তার খবর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন তার স্বামীর লাশ দেশে আনতে ৩ লাখ টাকা দাবী করেছেন সৌদি আরবে অবস্থানরত জয়নালের সহযোগী বাংলাদেশী। এই প্রেক্ষিতে আমি জেদ্দায় মোবাইলে খবর নিয়ে জানতে পারি, লাশ আনার জন্য কোনো প্রকার টাকা পয়সা লাগেনা। এমনকি লাশ দেশে আসলে তার বিপরীতে সরকার তাকে আরো অর্থ দিয়ে থাকেন। আমি জয়নালের লাশ দেশে আনার প্রয়োজনীয় সকল প্রকার চেষ্টা চালাবো।



সংবাদটি শেয়ার করিুন

এই পাতার আরও সংবাদ:-



বিজ্ঞাপণ দিতে ০১৭১৮৯০২০১০



DMCA.com Protection Status
টিম-নরসিংদী প্রতিদিন এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে শাহিন আইটি এর একটি প্রতিষ্ঠান-নরসিংদী প্রতিদিন-
Theme Customized BY WooHostBD